দৌলতপুরে মণ্ডল বাড়ির ঐতিহ্যবাহী মিলনমেলা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অনুষ্ঠিত মণ্ডল বাড়ির ঐতিহ্যবাহী মিলনমেলায় উপস্থিত মণ্ডল পরিবারের সদস্যরা। ছবি: দেশ দর্পণ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী জামালপুর ও পাকুড়িয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মণ্ডল পরিবারের পারিবারিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যতিক্রমধর্মী এ মিলনমেলা সবার উপস্থিতিতে আনন্দ-উৎসবে মুখরিত হয়ে ওঠে। ‘এসো মিলি প্রাণের টানে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে নানা অায়োজনে মিলিত হয় ঐতিহ্যবাহী এই পরিবারটি।

শনিবার (১ জুলাই) পাকুড়িয়ার মণ্ডল বাড়ি প্রাঙ্গণে প্রায় তিন শতাধিক মণ্ডল পরিবারের সদস্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই পারিবারিক মিলনমেলা। আনন্দ-আড্ডা, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগিতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী মিলনমেলাটি। মণ্ডল বংশের আত্মীয়-স্বজনদের সরব উপস্থিতি আবেগ-উচ্ছ্বাসের প্রাণস্পন্দন আরো বাড়িয়ে দেয়। মিলনমেলার এ উৎসব সবাইকে নতুনমাত্রায় প্রেরণা জোগাবে, স্বজনদের আন্তরিকতা সমৃদ্ধ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মিলনমেলায় মণ্ডল পরিবারের সদস্য আনারুল আজিম হিটু বলেন, ঠিক কত বছর পরে সবাইকে কাছে পেলাম মনেই নাই। তবু পরিবারের সকলের সাথে মিলিত হতে পেরে শুকরিয়া মহান আল্লাহর কাছে। পারিবারিক মিলনমেলায় এসে অন্যরকম এক অনুভূতি অনুভব করছি। আগামীতে এই আয়োজনকে আরো সমৃদ্ধ করতে পরিকল্পনা নেয়া হবে। আরো বড় পরিসরে, আরো আনন্দঘন আয়োজনে মিলনমেলা উদযাপন করা হবে। তিনি বলেন, পারিবারিক মিলনমেলা একটি বংশের আভিজাত্যের প্রতীক। এই ধারা অব্যাহত রাখা হবে।

মণ্ডল পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য আসাদুজ্জামান সোনা মেম্বারের সভাপতিত্বে এ মিলনমেলার অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ রফিকুল আলম পাপ্পু, রফিকুল ইসলাম, অহিদুল ইসলাম মাসুদ, হাবিবুর রহমান, দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি আশরাফুজ্জামান খোকন প্রমুখ।

মিলনমেলায় ‘মণ্ডল বংশের পরিচয়’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও সবার মাঝে বিতরণ করা হয়। বইটি গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন মো. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, মণ্ডল পরিবার দৌলতপুর সীমান্তের একটি স্বনামধন্য পরিবার। পরিবারের সবাইকে নিয়ে মিলনমেলা উদযাপন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। যারা এই মিলনমেলায় যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে সফল ও সার্থক করেছেন তাদের সবাইকে পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মণ্ডল বংশের প্রয়াত সদস্যদের কবর জিয়ারত ও রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। আগামী বছর আরো বর্ণাঢ্য আয়োজনে আবারো প্রাণের বন্ধনে মিলিত হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে শেষ হয় এবারের আয়োজন। অন্যরকম এক অনুভূতি নিয়ে সবাই ফিরে যান নিজ নিজ গন্তব্যে।

উল্লেখ্য, দৌলতপুর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী প্রাগপুর ইউনিয়নের জামালপুর ও পাকুড়িয়া গ্রাম দুটি ছিল মণ্ডলদের ভিত্তিভূমি। এখানে মণ্ডলরা কাটিয়েছেন যুগের পর যুগ। কালের পরিক্রমায় বংশটির বর্তমান প্রজন্ম ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে।