অপহরণের ৫ মাস পর শ্রীপুর থেকে নোয়াখালীর যুবককের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার

অপহরণের পাঁচ মাস পর নিখোঁজ যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে দক্ষিনখান থানা পুলিশ।  গাজীপুরের শ্রীপুরে অপহরণের পাঁচ মাস পর নিখোঁজ যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামির দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

আজ বুধবার উপজেলার গাজীপুরের শ্রীপুরের পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় রহিম মোল্লার বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে ডিএমপির দক্ষিণখান থানা–পুলিশ।

এর আগে বুধবার সকালে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার তাইজুল ইসলাম জামে মসজিদ থেকে আসামি তারকে ওরফে তারেক আহমেদকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সেখানে তাবলীগ জামাতের সাথে অবস্থান করছিলেন বলে জানান এলাকাবাসী।

তারেক নাটোর সদর উপজেলা রুয়েরবাগ গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে সে সমকামিতায় আসক্ত ছিল।  তারেক ছিনতাইকারী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্যদিকে নিহত যুবক আমির হোসেন (২৫) নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায় তুলাচারা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।

নিহতের বোন কামরুন্নাহার বলেন, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার আশকোনা এলাকা থেকে নিখোঁজ হন তাঁর ভাই। এরপর কয়েক মাস বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। গত ১৩ এপ্রিল তাঁর ভাই বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে ডিএমপির দক্ষিণখান থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এরপর অপহরণকারীকে তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে  গ্রেপ্তার করেতে সক্ষম হন দক্ষিণখান থানা পুলিশ । তাঁর দেওয়া তথ্য মতে শ্রীপুর থেকে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তিনি বলেন, ‘আমার ভাইকে অপহরণের পর অজ্ঞাত ব্যক্তি ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একাধিকবার ফোন করেন।

মামলার বাদী নিহতের ভাই বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারী আমার ভাইকে অপহরণের পর শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা এলাকা নিয়ে একটি বাড়িতে আটকিয়ে রাখে। সে আমার ভাইকে নির্যাতন করে খুন করার পর বস্তাবন্দী সেপ্টিট্যাংকে ফলে দেয়।’

ডিএমপির দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোছা. রেজিয়া খাতুন  বলেন, গত ১৩ এপ্রিল নিহতের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারীর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারি।বুধবার নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার তাইজুল ইসলাম জামে মসজিদ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করি। গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্য মতে গাজীপুরের শ্রীপুরে পৌরসভা এলাকার রহিম মোল্লার বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এসআই আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি একজন সমকামিতা গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। তাঁর ফেসবুকে একটি একটি গ্রুপ আছে। এটির মাধ্যমে  যুবকদেরসাথে মেসেঞ্জারে  ভাব জমিয়ে ডেকে এনে ছিনতাইয়ের পর ছেড়ে দেন। অভিযুক্ত আসামি নিহত যুবককে অপহরণের পর শ্রীপুরে এক সপ্তাহ যাবৎ ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে রাখেন। এরপর  গত বছরের ২৮শে ডিসেম্বর মাওনা বাজার থেকে বস্তা ও রশি কিনে এনে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। লাশ বস্তায় ভরে পরিত্যক্ত সেপ্টিট্যাংকে ফেলে রাখেন। হত্যার পর অপহরণকারী এই বাড়িতে চার দিন অবস্থান করেন। এরপর নোয়াখালী জেলার হাতিয়ায় পালিয়ে যান।

ডিএমপির দক্ষিণখান থানার ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণকারীকে গ্রেপ্তারের পর শ্রীপুর থেকে ভিকটিমের বস্তাবন্দী গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বিষয়টিনিয়ে উত্তরা বিভাগের ডিসি মো. মোরশেদ আলমের প্রেস ব্রিপিং করার কথা রয়েছে।

মে  ১৮, ২০২৩ at ১০:০৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোরইমি/ইর