জাবিতে দিনের আলোয় জঙ্গলে ঘটছে র‍্যাগিং এর ঘটনা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা র‍্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছে নিয়মিত।সোমবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পিছনে সুন্দরবন নামক এলাকায় র‍্যাগিং এর ঘটনা ঘটে। সন্দেহের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডি সেখানে গেলে দেখা যায় অর্থনীতি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। তবে তারা জানায় সবাই নবীন শিক্ষার্থী (৫১তম আবর্তন) ও তারা সেখানে ঘুরতে এসেছে।

তার কিছুক্ষণ আগেই সেখানে বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫০তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা ৫১তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের র‍্যাগ দিচ্ছিলো। প্রক্টোরিয়াল বডি সেখানে আসার আগেই তারা সেখান থেকে চলে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫১তম আবর্তনের একাদিক শিক্ষার্থী জানায়, প্রায় দেড় ঘন্টার মতো তাদের র‍্যাগ দেওয়া হয়। এসময় তাদেরকে মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হয়। ম্যানার শিখানোর নামে, সিনিয়ররা গালিগালাজ ও ধমক দেয়। সিনিয়দের সালাম না দেওয়ায় আমাদের শ্বাসায়। আমাদের একজনকে চেয়ার (র‍্যাগিং এর একটা অংশ) বানায়। এমনকি আমাদের একটি ক্লাস শেষ হয় সাড়ে ১১টায় পরের ক্লাস শুরু হবে ১টা ১৫ তে, এর মাঝে আমরা ফ্রি টাইমে র‍্যাগিং এর জন্য দুপুরের খাওয়া-দাওয়াও করতে পারিনি।

একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসছি পড়াশোনা করতে। যেখানে সিনিয়রদের থেকে আমরা একাডেমীক সহযোগিতা পাবো, তাদের সাথে ও তাদের মাধ্যমে আমরা সিনিয়দের সাথে পরিচিত হবো। তার পরিবর্তে শিকার হতে হচ্ছে মানসিক নির্যাতনের। এরূপ আচরন আসলের কাম্য নয়।

আরো পড়ুন :
>শিশু শিক্ষার্থী মায়ার চিকিৎসার জন্য মাত্র ৩ লাখ টাকার দরকার সাহায্যের আকুতি
>খানসামা উপজেলায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান পরিচালনা; চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

এব্যপারে ৫০ব্যাচের দুই ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ নাফিসা তাবাসসুম ও পারভেজ জানান, আমরা ওদের নিয়ে বসেছিলাম। কিছুদিন পর আমাদের বায়োটেক ক্লাবের একটা প্রোগ্রাম আছে সেটা নিয়ে কথা বলেছি। র‍্যাগিং এর তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

র‍্যাগিং এর ঘটনার বিষয়ে বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি উম্মে সালমা যোহরা বলেন, আমি এখনো ঘটনা শুনিনি। এব্যাপারে জেনে, দুই পক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এব্যাপারে সহকারী প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রনি হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে সহকারী প্রক্টর মনির শিকদার ও অনুপ মজুমদারসহ ঘটনা স্থলে আসি। এসে কাউকে পাইনি তবে খোজ পেয়েছি এরকম একটি ঘটনা সেখানে ঘটেছে তারা প্রায় দেড় ঘন্টা অবস্থান করেছিলো। যখন ছাত্রদের সাথে কথা বলেছি মনে হয়েছে তারা ভীত সন্ত্রস্ত। কিন্তু তারা র‍্যাগিং এর বিষয়টি অস্বীকার করেছে, হয়তো ভয় পেয়ে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আমরা বিভাগের সভাপতির সাথে কথা বলতে গিয়েছি কিন্তু উনি না থাকায় বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শরিফ হোসাইন স্যারের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করবেন এবং বিভাগে অন্যান্যদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এর আগে গতকাল র‍্যাগিং এর ঘটনায় অর্থনীতি বিভাগের ৪৯তম ও ৫০তম আবর্তনের একদল শিক্ষার্থীদের ওই যায়গায় পাওয়া যায় তবে ওই দিনও র‍্যাগিং হয়নি বলে তারা জানায়।

মার্চ ১৩, ২০২৩ at ১৮:৩৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/নাউ/মমেহা