জঙ্গলবাধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এবার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে রোববার ম্যানেজিং কমিটির তিন সদস্য লিখিতভাবে ওই অভিযোগ করেছেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষককে রক্ষা করতে অনৈতিক ঘটনার রাজস্বাক্ষী অফিস কক্ষে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজটি খুলে নিয়ে গেছেন সভাপতি। ফলে এই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি ওই স্কুলের ছাত্রীদের মধ্যে যেমনি আতংক সৃষ্টি হয়েছে তেমনি অভিভাবকদের মধ্যেও নানান সংশয় দেখা দিয়েছে।
যশোর সদর উপজেলার জঙ্গলবাধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নাজিম উদ্দিন, দাতা সদস্য শফিকুল ইসলাম এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য রুমা পারভীনের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত ১৬ ফেব্রয়ারি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী টিফিন টাইমে নামাজের জন্য সময় বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যায়। এসময় প্রধান শিক্ষক নামাজ কম করে পড়ে সময় বাঁচানোর জন্য বলেণ। কিন্তু এরই মধ্যে নিজ চেয়ার থেকে উঠে এসে ওই ছাত্রীর সাথে অনৈতিক আচারণ শুরু করেন।
ভয়ে কান্নাকাটি করে ছাত্রী বেরিয়ে শ্রেণি কক্ষে যায়। এরপরে তার কয়েকজন সহপাঠি শান্থনা দেয়। বিষয়টি ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে জানায়। তার মা এই ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। এতে করে প্রধান শিক্ষক আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। জানা গেছে, এই বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের উপস্থিতিতে ওই ছাত্রীর চরিত্র নিয়েও অনেক কথা বলেছেন প্রধান শিক্ষক।
ফলে এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এখন ম্যানেজিং কমিটির তিন সদস্য প্রকাশ্যেই মাঠে নেমেছেন। গতকাল রোববার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই তিন সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি আবেদন সভাপতির বরাবর দিয়েছেন। শুধু তাই নয় এই ঘটনাটি জানাজানি হলে গত ১৯ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক অভিস কক্ষে গিয়ে অনৈতিক ঘটনার রাজস্বাক্ষী সিসি ক্যামেরার ফুটেজটি খুলে নিয়ে গেছেন সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিন্টু।
আরো পড়ুন:
> তৈয়বপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরুস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত
> চৌগাছার জগদীশপুর তুলার খামারে জনবল সংকট
এদিকে প্রধান শিক্ষকের এই আচারণের জন্য জঙ্গলবাধাল স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রী আতংকের মধ্যে রয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয় মেয়েদের ওই স্কুলে পাঠাতে এখন অভিভাবকরা নানান সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। এই ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী বলেছেন, এমন ঘটনা ঘটেনি। আমি পরিস্থিতির শিকার। সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিন্টু বলেছেন, এই ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক পরিবার।
এখানে আমার (সভাপতি) কিছুই করনীয় নেই। এই ব্যাপারে ২৬ ফেব্রæয়ারি রাত ৭টা ৫১ মিনিটে যশোর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের ব্যবহৃত ০১৭১১৪৬০০৩০ নম্বরে একাধিকবার রিং করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম আজম বলেছেন, এই ধরণের অপরাধ প্রমানিত হলে প্রধান শিক্ষকের চাকরিও চলে যেতে পারে।
ফেব্রুয়ারি ২৬,২০২৩ at ২১:৩২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মেইস/এসআর