ঝিকরগাছায় নিরাপদে সড়ক পারাপারের দাবিতে মানববন্ধন

ঘটনাস্থলেই কাভার্ডভ্যান চাপায় মারা গেল মোটরসাইকেল আরোহী। দীর্ঘদিন ধরেই ঝিকরগাছা উপজেলা মোড় এলাকায় নিরাপদে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক পারাপারের ব্যবস্থার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিল স্থানীয়রা। বুধবার সকাল ১০টায় উপজেলা মোড় এলাকার পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাভকসহ এলাকাবাসী মানবন্ধন করে। মানববন্ধনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেবা, ঝিকরগাছা রিপোর্টার্স ক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়।

মহাসড়ক সংলগ্ন হাসপাতাল মোড় থেকে বাজার পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন প্লাকার্ড হাতে নিয়ে কয়েকশত শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম, ঝিকরগাছা বিএম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সামাদ, ঝিকরগাছা দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক আশরাফুজ্জামান বাবু ও শিক্ষিকা রোজিনা খাতুন।

বক্তারা বলেন, উপজেলা মোড় থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। অথচ এ এলাকায় কোনো গতিরোধক নেই। তাই অনতিবিলম্বে তিনটি গতিরোধক ও একটি উড়াল সেতু করতে হবে। গত ৫ বছরে এখানে অন্তত দশটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি করেন বক্তারা। এদিকে মানববন্ধন শেষ হওয়ার মাত্র দুই ঘন্টা পরেই একই স্থানে কাভার্ডভ্যান চাপায় মারা গেছেন এক মোটরসাইকেল আরোহী। নিহত রনি হোসেন (২১) নাভারণ যাদবপুর গ্রামের তার ভগ্নিপতি হুমায়ন কবিরের বাড়িতে থাকতেন।

তিনি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে। তিনি তার ভগ্নিপতির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মেসার্স বলাকা মোটরস এর মার্কেটিং কর্মকর্তা ছিলেন। পাশাপাশি নাভারণ কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী মাষ্টার আশরাফুজ্জামান বাবু জানান, একটি বাসের পিছনে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন রনি।

বাসটি উপজেলা মোড়ে দারুল উলুম কামিল মাদরাসার সামনে থামলে তিনি অভারটেক করেন। এসময় পেছন থেকে বেনাপোলগামী নাসির ট্রান্সপোর্টের একটি কাভার্ডভ্যান তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই রনি মারা যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কাভার্ডভ্যানের চাপায় ঘটনাস্থলেই রনি মারা যায়। তার লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঝিকরগাছা বাজার বা তার আশেপাশে সবথেকে বেশি দুর্ঘটনা কবলিত স্থান হলো উপজেলা মোড়।

আরো পড়ুন:
>ঝিকরগাছার পল্লীতে ছাগল ঘরে আগুন
>গাবতলীতে ২’শ ৯৩ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার, আটক-১

এখানে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত চারহাজার শিক্ষার্থী রাস্তা পারাপার হয়। তাদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য ফুটঅভার ব্রিজ কিংবা স্পীড ব্রেকার স্থাপনের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানায় এই পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান। তারা হলেন, ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুল, ঝিকরগাছা সরকারি এমএল মডেল হাই স্কুল, ঝিকরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাছিম বিল্লাহ শিশু একাডেমি এবং ঝিকরগাছা দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা প্রধান। আবেদনে বলা হয়, ইতোমধ্যে উপজেলা মোড় এবং হসপিটাল রোড এরিয়ার মধ্যে শিক্ষার্থীসহ ৪/৫ জনের মৃত্যু ও অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে।

উপজেলার মাসিক সভায় বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়। এরকম ভীতিকর অবস্থায় শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারে অভিভাবকদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে উপজেলা মোড় সংলগ্ন তিনটি স্পীড ব্রেকার জরুরী ভিত্তিতে স্থাপনের জন্য দাবি জানানো হয়। একই দাবিতে বুধবার সকালে মানবন্ধন করে এই পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাভকসহ এলাকাবাসী।

ফেব্রুয়ারি ০৮.২০২৩ at ১৯:২৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মেইস/ এসআর