নওগাঁয় শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনভারী কুয়াশায়, বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ!

ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় উত্তরের জেলা নওগাঁয় শীত জেঁকে বসছে। পৌষের শুরুতেই তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। সকাল থেকে কুয়াশায় ছেয়ে ছিল নওগাঁর পথ-ঘাট, প্রান্তর। কুয়াশার কারণে সড়কগুলোতে বাস, ট্রাক, পিকআপ, মোটরসাইকেল, ভ্যানগুলোকে হেডলাইন জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। সকাল ১০ পর্যন্ত মিলে নাই সূর্যের দেখা। হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতাকে বাড়িয়ে তুলেছে।

এতে করে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিপাকে পড়ছেন শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ।অন্যদিক শীতের তীব্রতা কাঁপন ধরিয়েছে মানুষের হারে। তাপমাত্রা হ্রাস পেতে শুরু করায় শীতের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। বাড়ছে করোনার প্রকোপও।ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল পথ শিশুরাও। ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন ধরনের ফসল ও সবজির ক্ষতির আশঙ্কা করছেন জেলার কৃষকরা।

সরজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শ্রমজীবী নারীদের একটি উল্লেখযাগ্য অংশ কাজ করেন বিভিন্ন ফসলের মাঠে। তারা জানান, ভোরে ঘুম থেকে ওঠে নিজেই রান্না করতে হয়। এই শীতে সাংসারিক কাজকর্ম সেরে কর্মস্থলে যেতে তাদের অনেক কষ্ট হয়। সমবার সকালে কথা হয় আত্রাই উপজেলার পাইকারা গ্রামের শ্রমজীবী নারী শারমিন আক্তারের সঙ্গে। তিনি জানান, খুব সকাল সকাল তাকে ঘুম থেকে উঠে রান্না শেষে সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে তাকে কর্মস্থলে আসতে হয়।

আরো পড়ুন:
>জাবির শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২৫ জানুয়ারি
>জাগো ফাউন্ডেশনের নতুন কমিটি গঠন

কয়েক দিনের শীতে তাকে কর্মস্থলে আসতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পেটের দায়ে অনেকেই দিনমজুর হিসেবে মাটি কাটা, ইট ভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এদের মধ্য অনেকেই রয়েছে বৃদ্ধ। শীতের তীব্রতা ও গরম কাপড়ের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। ইটভাটায় কর্মরত সাজেদুর রহমান জানান, তার বাড়ি কিশোরগঞ্জে। পেটের দায়ে বৃদ্ধ বয়সে কাজ করছেন ইটভাটায়।

থাকেন ইটভাটার এক খুপড়ি ঘরে। তিনি বলেন, শীতের কারণে রাতে মাঝে মাঝে মনে হয় হাত-পা বরফ হয়ে গেছে।শহরের পার-নওগাঁর সিএনজিচালক বিপ্লব হোসেন বলেন, সকাল বেলা গাড়ি নিয়ে বের হলেও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি থাকায় লোকজন কম থাকে। এজন্য তাকে গাড়ি নিয়ে বসে থাকতে হয়।এসব নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশার মানুষ চায় স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে। এজন্য খেটে খাওয়া এসব শ্রমজীবী মানুষের পাশে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকার সদয় হয়ে পাশে দাঁড়াবেন এমনটাই প্রত্যাশাই করছেন তারা।

মঙ্গলবার নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গত শুক্রবার সকাল ৬টায় নওগাঁর বদলগাছীতে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সুত্রে জানা গেছে, আগের দিনের তুলনায় মঙ্গলবার তাপমাত্রা ২ দশমিক ০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় এক সপ্তাহ ধরেই তাপমাত্রা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে।

আরো পড়ুন:
>জাবির শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২৫ জানুয়ারি
>জাগো ফাউন্ডেশনের নতুন কমিটি গঠন

গত বৃহস্প্রতিবার সন্ধ্যা থেকেই নওগাঁয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এর আগে গত মঙ্গলবার নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকড করা হয় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এদিকে জেলা জুড়ে শীত জেঁকে বসায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় স্থানীয় মানুষ এ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছেন।

জানুয়ারি ০৪.২০২৩ at ১৪:১১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর