শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে শিবগঞ্জে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। আর মাত্র ক’দিন পরেই সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। পূজার প্রায় ২ মাস আগে থেকে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মন্ডপে দূর্গা পূজা উদ্যাপন করা হবে। সনাতন সম্প্রদায়ের দেবী দূর্গা এবার গজে আগমণ এবং নৌকায় গমণ করবেন।

এ বছর শিবগঞ্জ উপজেলায় ৬৩ টি পূজা মন্ডপে পূঁজা অর্চনা হবে। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি ইতোমধ্যে পূজা উদযাপনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে গত বছরে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পূজা মন্ডপগুলোতে সাজসজ্জা তেমন ছিলো না। এবছর শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যাপক সাজ সজ্জার মধ্যে দিয়ে এবং পূজামন্ডপে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূঁজার কার্যক্রম করা হবে।

উপজেলার পূজা মন্ডপ গুলো ঘরে দেখে গেছে, মন্ডপ গুলোতে উৎসবের ছোয়া লেগেছে। বিরামহীন ভাবে প্রতিমা তৈরীর কাজ করেছেন প্রতিমা শিল্পীরা। উপজেলার সাদুল্যাপুর গ্রামের মৃত: বিনোদ বিহার অধিকারীর ছেলে হিরেন চন্দ্র অধিকারী প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন। ৫০ বছর ধরে এ পেশায় আছেন তিনি। তিনি ও তার ছেলে সুভ্রত অধিকারী তৈরী করেন প্রতিমা।

আরো পড়ুন :
শরতের শুভ্রতায় সেজেছে লাল মাটির ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

গত বছরে করোনা ভাইরাসের কারনে দূর্গা পূজা তিনি প্রায় ৫টি প্রতিমার কাজ করেছেন। এবার তিনি আটটি মন্ডপ থেকে প্রতিমা তৈরীর অর্ডার পেয়েছেন। এই আট সেট প্রতিমা তৈরীর কাজে বেশ ব্যস্ত তিনি। তার ছেলেও তাকে এ কাজে সহযোগিতা করে আসছেন। দিনরাত কাজ করছেন তারা। আর কয়েকদিন পরেই শারদীয় দূর্গা পূজা। নির্ধারীত সময়ের মধ্যেই তাকে সরবরাহ করতে হবে প্রতিমা গুলো। তাই নাওয়া খাওয়া ফুসরত নেই হিরেনের। তিনি প্রতিটি দূর্গা প্রতিমার সেট বিক্রি করেন ষোল হাজার থেকে সতের হাজার টাকা।

সাদুল্যাপুর গ্রামের প্রতিমা শিল্পী শ্রী হিরেন চন্দ্র বলেন, হামরা খুব কষ্ট করে মাঠির প্রতিমা বানাই। কি করমো আর অন্য কাম করবের পারিনে এ পেশাকে আঁকরে ধরেই আছি। একন হামাকেরে অবস্থা খুব খারাপ সেডে দেকপিডাকে? দেকপের কেও নাই।

তিনি আরও জানান, প্রতিমা তৈরীর জন্য ব্যবহৃত এটেল মাটি তাদের গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাগনা আনা যেত। এখন সেই মাটি অন্য জায়গা থেকে টাকা দিয়ে কিনে ভাড়া করা গাড়িতে করে আনতে হয়। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মাটি দিয়ে তৈরি করে রোদে শুকিয়ে রং করে সেগুলো উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ গুলোতে বিক্রি করা হয়। তার তৈরী প্রতিমা শিবগঞ্জ উপজেলা পেরিয়ে সোনাতলা, গোবিন্দগঞ্জ, ঘোড়াঘাটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা পূঁজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি রাম নারায়ণ কানু বলেন, এবছর পূজা মন্ডপ গুলোতে সাজসজ্জা করা হবে, তবে পূজা মন্ডপ গুলোতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে না এবং বিদ্যুৎ স্বাশ্রয়ের বিষয়টি নজর দেওয়া হবে । পূজা উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার সবকটি মন্ডপে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূজা উদ্যাপন করবেন ভক্তরা।

সেপ্টেম্বর ১৩,২০২২ at ১৪:২১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ /আক /সজ /শই