মনিটরিংয়ের অভাব, অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে চালের বাজারে আগুন

যশোরের অভয়নগরে অসাধু সিন্ডিকেটের কবলে চালের বাজার। বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং না থাকার লাগামহীনভাবে বাড়ছে এই নিত্য পণ্যটির দাম। কোন কারণ ছাড়াই লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে চালের দাম। চালের দাম কেজি প্রতি ৫/১০ টাকা বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষ চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। এর আগেও সিন্ডিকেটের কারণে বেড়েছে এবং সয়াবিন তেলের দাম। দাম নিয়ন্ত্রণে উপজেলা বাজার মনিটরিং করা জরুরি কিন্তু চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না। গত ১৫/২০ দিন ধরেই মোটা-চিকনসহ সব ধরনের চালের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। কি কারণে চালের দাম বাড়ছে তার কোন উত্তর দিতে পারেনি চালের খুচরা এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তবে খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দাম বেড়েছে।

নওয়াপাড়ার অসাধু কিছু ব্যবসায়ী চাল মজুদ করে বাজারে চালের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। আর এতে করে সিন্ডিকেটের কাছে চলে যাচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। তবে সচেতন মহল মনে করে এসবের জন্য দায়ী উপজেলা বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকে।

অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারসহ বিভিন্ন চালের খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। আর গুটি, স্বর্ণাসহ প্রায় সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা, পারিজা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, ঊনত্রিশ ও আটাশ ৫৫ থেকে ৬০টাকা, মিনিকেট, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬৫টাকা এবং বাসমতী ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর যাঁরা পোলাওয়ের চাল নিতে চান, তাঁদের প্রতি কেজিতে গুনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা।

আরো পড়ুন:
মোহাম্মদ নাসিম মানুষের হৃদয়ে জাগ্রত থাকুক, তাঁর আদর্শেই এগিয়ে নিতে চাই: এমপি জয়
নড়াইলে প্রধানমন্ত্রীর ‘১০ টি উদ্ভাবনী উদ্যোগ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নওয়াপাড়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী রহমান হোসেন বলেন, পাইকারি বাজার থেকে আমাদের চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে হয়। কারণ, পরিবহন খরচ, দোকান ভাড়া এবং কর্মচারীদের বেতন হিসাব করলে আমাদের তেমন একটা থাকে না। এর মধ্যেই আমাদের ব্যবসা করতে হয়। তিনি আরও বলেন, বাজার পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি কম বাড়লেও খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫/১০ টাকা। যা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না আর এর দায়ভার চাপে পাইকারি ব্যবসায়ীদের উপর। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করতে হবে। তা না হলে বাজারে দীর্ঘ মেয়াদে এর প্রভাব পড়বে।

নওয়াপাড়া বাজারে কথা হয় চাল ক্রেতা বেসরকারী শিক্ষক ফখরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, সরকার বলছে, পর্যাপ্ত চালের মজুদ আছে। তাহলে কয়েক মাস থেকে চালের বাজার অস্থির কেন? তিনি চালের বাজার মনিটরিং করার দাবি জানান।

উপজেলা চেঙ্গুটিয়া বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, আমিনুর রহমান বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে চালের দাম বেড়েছে, যারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের বাজারটাকে জিম্মি করে রাখে। তারা চাল মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে।এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে পারলে বাজার কোনভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে না।

এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের বাজার মনিটরিং টিম সব সময় চাল মজুরদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। মজুদারেরা চাল মজুদ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা এক চাল মজুদারকে অতিরিক্ত চাল রাখার দায়ে অভিযান পরিচালনা করে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়।

জুন ১৩,২০২২ at ১৬:৫০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জহ/জআ