আবারও বেনাপোল বন্দরে অগ্নিকান্ড: ভষ্মিভূত পণ্যবোঝাই ৭টি ভারতীয় ট্রাক

আবারও বেনাপোল স্থলবন্দরে ব্লিচিং পাউডার বোঝাসহ ৭টি ভারতীয় ট্রাকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ভষ্মিভূত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৫টার দিকে বন্দরের ট্রাক টার্মিনালের টিটিআই (ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড) মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানকে প্রধান করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিকে আগামি ৫ দিনের মধ্যে অগ্নিকান্ড ঘটনাসহ ক্ষয়ক্ষতির পরিমানের বিষয়ে তদন্ত রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই দশকে এ বন্দরে ১০টি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ অগ্নিকান্ড ঘটনায় হাজার হাজার কোটি টাকার পণ্য পুড়েছে। এতে অনেক আমদানিকারক পুঁজি হারিয়ে বসেছে পথে।

বন্দরের একাধিক নিরাপত্তাকর্মী জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত ব্লিচিং পাউডার বোঝাই ৬টি ট্রাক বন্দরের টিটিআই মাঠে আনলোডের অপেক্ষায় ছিল। ট্রাকে এসব পণ্য ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ছিল। ভোরে প্রথমে একটি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। পরে পাশে থাকা আরও বাকি ৫টি ব্লিচিং বোঝাই ট্রাক এবং অন্য পণ্য থাকা ১টি ট্রাকেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অতিরিক্ত গরমের কারণে ব্লিচিং বোঝাই ট্রাকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:
কোটচাঁদপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি
মহানগরীতে টিসিবির গাড়ীতে হামলা, আড়াই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ

বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের দ্বায়িত্বে অবহেলা অব্যবস্থাপনা খামখেয়ালীপনা জায়গা সংকট ও পণ্য চুরি আড়াল করতে বারংবার এ বন্দরে আগুণ লাগার ঘটনা ঘটে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থ আমদানিকারকদের। এ অগ্নিকান্ড ঘটনায় হাজার হাজার কোটি টাকার পণ্য পুড়ে অনেক আমদানিকারক পুঁজি হারিয়ে বসেছে পথে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বন্দরের কতিপয় কর্মকর্তা ও আমদানিকারক প্রতিনিধিরা জানান, ব্লিচিং পাউডার খুবই দাহ্য পণ্য হওয়ায় একটু গরম পড়লে তা ঘেমে আগুণ ধরে, আবার পানি পাইলেও ভিজে আগুণ ধরে। সেজন্য নিয়ম মাফিক ফাঁকা জায়গায় রাখতে হয়। সেখানে বন্দরের স্থান সংকুলান হওয়ায় টিটিআই মাঠে অন্যান্য পণ্যের সাথেই ব্লিচিং পাউডারবাহী ভারতীয় ট্রাকগুলো রাখা হয়েছিলো।

অন্যদিকে নববর্ষসহ দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় অধিকাংশ কর্মকর্তাগণ কর্মস্থলে না থাকা এবং ট্রাক ড্রাইভাররা ভারতে চলে যাওয়ায় দেখভালের অভাবে অতিরিক্ত গরম থেকে ঘেমে এ আগুণের সুত্রপাত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার রতন কুমার দেবনাথ বলেন, ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট টানা ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কী কারণে আগুন লেগেছে তা তদন্ত না করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এর আগেও কয়েকবার ব্লিচিং পাউডার থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনার প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। তদন্ত স্বাপেক্ষে বলা যাবে বলে জানান তিনি।

এপ্রিল ১৪.২০২২ at ১৭:২৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক /শাশি