যশোরের জেলা নির্বাচন অফিসারকে প্রত্যাহারে সাংবাদিকদের আন্দোলনের আল্টিমেটাম ঘোষনা

যশোর জেলার সিনিয়র নির্বাচন অফিসার হুমায়ুন কবির ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার আতিকুল ইসলামকে যশোরে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে অবিলম্বে তাকে প্রত্যাহার করার আহবান জানানো হয়েছে। সাধারণ জনগণসহ সাংবাদিকদের সাথে অব্যাহত ভাবে অসৌজন্যমুলক আচরনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে যশোরে কর্মরত সাংবাদিকদের ৭টি সংগঠনের এক যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

অন্যথায় সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচী নিয়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে বলেও ওই সভা থেকে সিইসির প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। একই সাথে যশোর নির্বাচন অফিসে চলমান অনয়িম দুর্নীতি ও জনহয়রানী বিষয়ক অনুসন্ধানী সংবাদ একযোগে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় এবং একই সাথে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদেও প্রতি নেতৃবৃন্দ আহবান জানান।

প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে ক্লাবের সহ সভাপতি নূর ইসলাম, যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক একরামউদ্দৌল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক দৈনিক গ্রামের কাগজের সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক এইচ আর তুহিন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি এম আইউব ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান, বাংলাদেশ ফটো জার্ণালিষ্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুনিরুজ্জামান মুনির ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, যশোর টিভি জার্ণালিষ্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাকিরুল কবির রিটন ও সাধারণ সম্পাদক শিকদার খালিদ, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ দিনু আহমেদ সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোর্শেদ ও প্রেস ক্লাব যশোরের যুগ্ম সম্পাদক সরোয়ার হোসেন ও মিলন রহমান, কোষাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান রিপন, দপ্তর সম্পাদক তৌহিদ জামান, ক্রীড়া ও সমাজসেবা সম্পাদক তোহিদ মনি, নির্বাহী সদস্য শহিদ জয়, ফিরোজ গাজী সাজেদ রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন প্রেসক্লাব যশোরের সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমান।

সভায় যশোর জেলার সিনিয়র নির্বাচন অফিসার হুমায়ুন কবির ও তার সহকর্মী আতিকুল ইসলামের চলমান আচার আচরন নিয়ে সাংবাদিক নেতারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে পেশাগত দাায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকরা জেলা নির্বাচন অফিসারের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন।

শুধু সাংবাদিকরাই নয়, জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই অফিসে আগত সাধারণ জনগনের সাথেও জেলা নির্বাচন অফিসার হুমায়ুন কবির ও তার সহকর্মী আতিকুল ইসলাম প্রায়ই দুর্ব্যবহার করেন। এছাড়া এই অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। বিশেষ করে নামের ভুল সংশোধনী, এনআইডি কার্ডের সমস্যা, পিতা মাতার নামের বানান ভুল, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনসহ নানারকমের কাজ নিয়ে যখনই কোন সাধারণ মানুষ জেলা নির্বাচন অফিসে যান তিনি বা তারা বিড়ম্বনার শিকার হন।

আরো পড়ুন :
অবশেষ ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বিধবা ভাতা পেলেন, অঞ্জনা বালা
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার সম্ভাবনা দেখছে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন

প্রায়ই এই ধরনের অভিযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদেও কাছে অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাইসহ পেশাগত কারনে সাংবাদিকরা জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে গেলে তাদেরকে তিনি নানা ভাবে হেনস্তা করেন।

বিশেষ করে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক ( সাংবাদিক) কার্ড নিতে গিয়ে সাংবাদিকরা বেশি করে হেনস্তার শিকার হন। অনেক সময় জেলা নির্বাচন অফিসার পেশাদার সাংবাদিকদেও তার কক্ষ থেকে বের করে দেন। নানা ভাবে সাংবাদিকতার পেশা নিয়ে কটূক্তি করেন।

যার সর্বশেষ শিকার হন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যশোর জেলা সংবাদপত্র পরিষদেও সভাপতি দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক প্রবীন সাংবাদিক একরামউদ্দৌল্লাহ ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব মুকুল। এছাড়া বিভিন্ন টিভির সাংবাদিক ও ক্যামেরা ম্যানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন জেলা নির্বাচন অফিসার।

এই কার্যালয়ে প্রতি পদে পদে জনগণকে হয়রানীর শিকার হতে হয়। যার প্রতিকারে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন একত্রিত হয়ে এক যৌথ সভা করে অবিলম্বে এই দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকর্তাকে যশোর থেকে প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম ঘোষনা করেন।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই কর্মকর্তাকে যশোর থেকে যদি প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে বৃহত্তর কর্মসূচী নিয়ে সাংবাদিকরা রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। একই সাথে যতদিন এই কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত থাকবেন ততোদিন তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে সব পজেটিভ খবর বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

জানুয়ারি ১৫.২০২১ at ১৮:২৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শজ/রারি