ঘোড়াঘাটে শ্বশুরের আত্মহত্যায় প্ররোচিত মামলায় জামাই গ্রেফতার

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের বহুল আলোচিত হানিফ কাউন্টর মাস্টার আ. হামিদকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত অপরাধে মামলার অন্যতম আসামী মো. হাজিরুল ইসলামকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। রবিবার (১৬ জানুয়ারী) সকাল ১০টায় উপজেলার কশিগাড়ী আফসারাবাদ কলোনীর শ্বশুর আ. হামিদের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার বাদী নিহত আ. হমিদের ছোট ভাই আ. রহিমের এজাহার সুত্রে ও মামলার স্বাক্ষী এবং প্রত্যক্ষ্যদর্শী প্রতিবেশি সুত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী আ. রহিমের বড় ভাই উপজেলার কশিগাড়ী আফসারাবাদ কলোনীর মৃত আব্দুল হামিদ ঘোড়াঘাট থানাধীন রানীগঞ্জ বাজারে হানিফ বাস কাউন্টার চালাত।

অনুমান ২ বছর পূর্ব হতে জামাই হাজিরুল ও ফাতেমার প্রত্যক্ষ ইন্ধন ও সহায়তায় পুত্র, পুত্রবধু, জামাতা, কন্যা, স্ত্রী ও শালিকা মিলে মৃত আব্দুল হামিদ এর নামীয় জমি নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টিসহ শারীরিক ও মানসিক নির্ষাতন করতে থাকে।

বিষয়টি নিজে সামলাতে না পেরে আমাদের দুই ভাইসহ তার বন্ধু বান্ধবদের জানায়। বিষযটি নিয়ে পারিবারীকভাবে পুত্রদের ও জামাইকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা ভাইদের কোন কথায় কর্নপাত করেন। আ. হমিদের উপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টিসহ শারীরীক ও মানসিক নির্ষাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

এক পর্ষায়ে উপায়ান্তর না পেয়ে প্রায় এক বছর পূর্বে আ. হামিদ বাধ্য হয়ে তার নিজ নামীয় সকল সম্পত্তি, ব্যাংক-ব্যালান্সে উপরোক্ত পুত্র সাদ্দাম হোসেন ও মেয়ে কেয়া বেগমের নামে লিখে দেয়। তার কিছুদিন পর হতে জামাই হাজিরুল ও শালিকা ফাতেমার প্রত্যক্ষ ইন্ধন ও সহায়তায় আ. হামিদকে তার বাড়ী থেকে বের হয়ে চলে যাওয়ার জন্য পুনরায় বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টিসহ শারীরীক ও মানসিক নির্ষাতন করতে থাকে।

ঘটনার ৩ দিন পূর্বে ৩০/১২/২০২১ তারিখ সকাল অনুমান ১১টয় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ মারধর করে। তাকে দোতলার সিড়ি থেকে জামাই হাজিরুল ফেলে দেয়। মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং জখম হয়। বিষয়টি ৩ ডিসেম্বর শুক্রবার মহত ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশীদের জানালে তারা জুম্মার নামাজ পর শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সামাজিকভাবে মিমাংসা করার আশ্বস্ত করেন আ. হামদকে।

আরো পড়ুন :
ফুলবাড়ী খয়েরবাড়ীতে ৭৫০ জন শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযুক্ত আছিম উদ্দিন গ্রেপ্তার

মামলা জুম্মার নামাজ শেষে মহত ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশীদের লোকজন মারফত জানতে পারেন যে, আ. হামিদ তার বাড়ীর ২য় তলা বিল্ডিং এর নীচতলায় তার শয়ন কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্বহত্যা করেছে। উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে মহত ব্যক্তি ও প্রতিবেশীরা দ্রুত সেখানে গিয়ে আব্দুল হামিদ এর মরদেহ তার শয়ন ঘরের খাটের উপর শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায়। বিষয়টি সন্দেহ জনক হওয়ায় ঘোড়াঘাট থানা পুলিশকে জানালে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ নিহত আ. হমিদের মরদেহ উদ্ধারকরে।

পুলিশ মরদেহের সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্ত করে।পরে অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা নং-১৫, তাং- ০৩/১২/২০২১ ইং দায়ের করা হয়। আ. হামিদের মৃত্যু ঘটনাটি আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার প্রমাণিত হওয়ায় নিহত আ. হামিদের ছোট ভাই আ. রহিম (ধলু) বাদী হয়ে পুত্র, পুত্রবধু, জামাতা, কন্যা, স্ত্রী ও শালিকাসহ ৭ জনকে আসামী করে ১৫ জানুয়ারী একটি আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার মামলা দায়ের করে।

পুলিশ পর দিন ১৬ জানুয়ারী সকাল ১০টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মো. ফারুখুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আ. হামিদের কশিগাড়ী আফসারাবাদ কলোনীর বাসা থেকে মামলার ১নং আসামী জামাই হজিরুল ইসলামকে(৪৫) গ্রেফতার করে।

জানুয়ারি ১৬.২০২১ at ১৮:০৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মাউআমা/রারি