ঘোড়াঘাটে মহিলা নদীর তল দেশ থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন ভূমি মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে মহিলা নদীর তল দেশ থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করছে সামছুজ্জামান মানিক নামের এক ভ’মি দশ্যু।

শত শত বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।এ বিষয়ে ৩টি গ্রামের শতাধিক জমির মালিক ভুমি মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।

জমির মালিকদের অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, তারা অভিযোগে জনান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভার শ্যামপুর লালমাটি গ্রামের মো. জহুরুল ইসলামের পুত্র মো. সামসুজ্জামান মানিক, ঘোড়াঘাট পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের শ্যামপুর গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত মহিলা নদীর দক্ষিণ অংশে শ্যামপুর মৌজায় তার জমিতে প্রথমে পুকুর খননের উদ্দেশ্যে ভেকু মেশিন দ্বারা মাটি খনন শুরু করে।

পরে দুটি ভারী অত্যাধুনিক ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে নদীর তল দেশ থেকে মোটা পাইপের মাধ্যমে অনুমান গত ৩ মাস থেকে বালু উত্তোলন করে আসতেছে। শ্যামপুর গ্রামের মোছা. আলেমা বেগমের অভিযোগে বলেন,মহিলা নদীর দক্ণি পার্শ্বে থাকা আমাদের প্রায় ৮ একর জমি রয়েছে। এই ভাবে বালু উত্তোলন করতে থাকলে আশে পাশের গ্রাম ও আবাদি শত শত বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। উক্ত মৌজার মহিলা নদীর তীর ঘেঁষে আমার বসত বাড়ী এবং কৃষি জমিসহ আরো অন্যান্য লোকজনের কৃষি জমি রয়েছে।

আলেমা বেগম বলেন, মহিলা নদীর তীর বর্তী শামপুর মৌজার ১০৪,খাতিয়ান নং-৯৫/৮৪, হাল ২০০৭, ডিপি-২৯২, দাগ নং-৯০৩ এবং ৯০৩/১২১৯, ৯ একর ৬৬ শতাংশ আমরা পৈত্রিক সূত্রে উক্ত কৃষি জমির মালিক।উক্ত জমিতে অংশ সূত্রে আমরা ৮ ভাইবোন আম, লিচু ও অন্যান্য গাছের বাগানসহ কিছু কৃষি জমিতে দীঘর্ দিন যাবৎ চাষবাদ করে করে আসতেছি।

অনুরুপ অত্র এলাকার অন্যান্য লোকজন ও উক্ত মহিলা নদীর উভয় পার্শ্বের কৃষি জমিতে চাষবাদ করে আসতেছে। দুঃখজনক যে, বর্তমান সরকার কৃষি জমিতে পুকুর খনন করার নিষেধাজ্ঞাজারি করলেও কিছু দুষ্ট লোকের সহায়তায় শ্যামপুর লালমাটি গ্রামের মো. জহুরুল ইসলামের পুত্র মো. সামসুজ্জামান মানিক, অবৈধ ভুয়া কাগজ পত্র তৈরি করে নাম মাত্র মালিক হয়ে অল্প কিছু নদীর পাড়ের সম্পত্তি ক্রয় করে আমার কৃষি জমি সহ বহু লোকজনের কৃষি জমির মারত্বক ক্ষতি সাধান করার জন্য অবৈধভাবে সরকারি নদীর বালু উত্তোলন করে নদী তীর বর্তী কৃষি জমির মালিকগণের মারাত্বক ক্ষতি সাধান করতেছে বা করেছে।

বালু উত্তোলনের কারণে নদীর কোল ঘেষা কৃষি জমিসহ নদীর তীরবর্তী যে কোন কৃষি জমি যে কোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে বহুলোকের জীবন জীবিকার পথ হতে বঞ্চিত হবে। এমতাবস্থায় ভ্যেকু দ্বারা মাটি খনন করার ফলে আমি ও আমাদের জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বাগান এবং কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি সাধনসহ করেছে। অন্যান্য লোকজনের কৃষি জমির ব্যবপক ক্ষতিসাধন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোন সময় উক্ত জমি ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে।

জমির মালিক এ্যাড.নুরুন্নবী বলেন,সামছুজ্জামান মানিক এক জন ভ’মি দশ্যু ও বালু দশ্যু,অত্র এলাকায় সে ভুমি দশ্যূ নামে পরিচিত। সে অত্যাধুনিক ভেকু মেশিনে মহিলা নদীর তীর বর্তী তার জমিতে মাটি কেটে নদীর তল দেশ থেকে বালু উত্তোলন করে আমাদের ও অন্যান্য জমির মালিকের জমি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সামছুজ্জআমান মানিক এক জন দুষ্ট প্রকৃতির। মানুষের মাঝে সে মাতায় টুপি দিয়ে ভাল মানুষ সাজে।

আরো পড়ুন :
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
খানসামায় ৪৩তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন

তার বিরুদ্ধে ও তার বাবার বিরুদ্ধ অসংখ্য মামলা মোকদ্দমা রয়েছে।সামছুজ্জামান মানিক এক বছর জেল খেটেছে। সামছুজ্জামান মানিকের বাবার নামে ঢাকা, চিটাগাং, দিনাজপুর, রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় শত শত জালিয়াতি, প্রতারনা, জাল দলিল তৈরী, নারী কেলেংকারী, অর্থ আত্মসাৎ, জমি জবর দখলসহ বিভিন্ন অপকর্মের মামলা মোকদ্দমা রয়েছে।

বর্তমানে উক্ত সামছুজ্জামান মানিক অবৈধভাবে মহিলা নদীতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে নদীর তল দেশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে তীরবর্তী কৃষি জমি নদী গর্ভে বিলিন হবে। এতে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভ’মিকা পালন করার ফলে সামছুজ্জামান মানিক জেল খেটে এসে আরও বেপরোয়া হয়েছে।তার ভয়ে কেও মুখ খলতে সাহস পায়না।কেন য়ে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভ’মিকা পালন করছে তা আমার বোধগম্য নয়। এ্যাড. নুরুন্নবীসহ জমির মালিকরা বিষয়টির উপর তড়িৎ আইনগত ব্যবস্থা দাবী জানিয়েছেন।

ডিসেম্বর ০৮.২০২১ at ২০:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মাউআমা/রারি