মদনে চটা জাল দিয়ে মাছ শিকার, যোগাযোগে বাঁধা

নেত্রকোনার মদন উপজেলার বর্ণী নদীতে চটা জালে বেড় দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে। নদীর মাঝামাঝিতে জাল পেলে মাছ শিকার করায় পণ্যবাহী নৌকা যাতয়তে বিগ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁরা স্থানীয় মৎস্যজীবীদের নদীর ওই এলাকায় নামতে দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে শরিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে গেলে দেখা যায়, উপজেলার বর্ণী নদীর মদন অংশে আর ওপাশের উপজেলার তাড়াইল অংশে বেশ কয়েকটি স্থানে চটাবেড় ও সরকারি নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকারের দৃশ্য।

এলাকাবাসী জানান, তাড়াইল অংশের ধলা গ্রামের কিছু প্রভাবশালী লোকজন ও মদন অংশের আলমশ্রী গ্রামের কিছু লোকজন জমাভোগ করে মূল নদীর অংশে চটাবেড় ও চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার কারির জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এমনকি নদীটির অধিকাংশ স্থানে গাছের ডাল ও বাশঁপুতে মাছ শিকার করার জন্য কাটা দিয়ে রেখেছে। এলাকায় তাদের ভয়ে কেহ মুখ খোলতে সাহস পায় না।

মদনের ধানকুনিয়ার লালন, আলমশ্রী গ্রামের শহর উদ্দিন ও তাড়াইল উপজেলার ধলা গ্রামের আব্দুর রউফসহ ১৪-১৫ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি এ বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। প্রায় এক মাস ধরে এভাবে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এই বাঁধের কারণে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি মালবাহী বড় ধরণের নৌকা যাতায়ত করতে পারছে না।

আরো পড়ুন :
ঝিনাইদহে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষন, যুবক গ্রেফতার
কাজিপুরে ‘ভয়েস অব কাজিপুর’ দিল মানবিক সহায়তা

নৌকায় লেগে সামান্য জাল ক্ষতি হলেও গালাগালিসহ গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা এমন অভিযোগও রয়েছে। যেভাবে পানি সড়ে যাচ্ছে এভাবে সড়ে গেলে এ নদী দিয়ে কোন মালবাহী নৌকা চলাচল করতে পারবে না। এলাকাবাসী ও ভোক্তভোগীরা নদীটি মুক্ত থাকার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

মৎস্যজীবি নারায়নবর্মণ, সুনিলবর্ণ জানান, মগড়ানদীসহ এলাকায় প্রতিটি উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রভাবশালীরা জাল ও গাছের ডাল পেলে কাটা দেয়ায় এখন আমাদের জাল পেলে মাছ ধরার কোন সুযোগ নাই। মাছ ধরতে গেলে অপমান অপধস্ত হতে হয়। তাই আমরা অন্য পেশা খুঁজছি।

বালু ও পাথর ব্যবসায়ী আব্দুল গণি মিয়া জানান, সিলেট সুনামগঞ্জ থেকে এ নদীপথ দিয়ে মদন, আটপাড়া, কেন্দুয়া ও নেত্রকোনা সদরে নৌ পথে মালামাল নিয়ে আসার একমাত্র রাস্তা এটি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ নৌ পথে শতাধিক জাল ও গাছের ডাল পেলে কাটা দেওয়ায় নৌকা নিয়ে যাতায়ত করা যাচ্ছে না। নৌকায় লেগে জাল ক্ষতি হলে মোটা অংকের টাকা দিতে হয় এমনকি তাদের মাধ্যমে অপধস্তও হতে হয়।

বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষকে অবগত করেও কোন সমাধান পাইনি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা (চ: দা:) জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ জানান, আগামীকাল আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

অক্টোবর ০৯.২০২১ at ১৭:০৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আআ/রারি