চিলমারীতে স্কুল ভবনের মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নদী ভাঙ্গনের মুখে থাকা দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজের২৫-৩০ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবনের এ্যাঙ্গেল, পাইপসহ বিভিন্ন মালামাল নিলাম না করে বিক্রি করে পকেটস্থ করার অভিযোগ উঠেছে স্কুলটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যোগ সাজশে প্রধান শিক্ষক বিচ্ছিন্নভাবে প্রায় ১৩লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে পকেটস্থ করেছে।এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ওই প্রধান শিক্ষক নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম করে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নে অবস্থিত দক্ষিণ্ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ২৫-৩০টি কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নদী ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে। এজন্য স্কুল ভবনটির ইট, এ্যাঙ্গেল, পাইপসহ বিভিন্ন মালামাল খুলে সংরক্ষণ করার কথা।

পরবর্তীতে মালামালসমুহ প্রকাশ্যে নিলাম করার কথা থাকলেও তা না করে প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম মন্ডল ও সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দফায় দফায় স্থানীয় আমির হোসেন, বেলাল হোসেন ও নওশাদ আলীর নিকট কম মূল্যে বিক্রি করে দেন।

তারা বেশী দামে জোড়গাছ বাজারের ভাংরি ব্যবসায়ী নয়ন মিয়ার নিকট মালামালসমুহ বিক্রি করে দেয়। এতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে অন্তত ১৩লাখ টাকার মালামাল নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিক্রি করে পকেটস্থ করার অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে সোমবার দুপুরে স্কুলটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভাংরি ব্যবসায়ী নয়ন মিয়া নৌকায় করে ৭হাজার ১১২কেজি লোহার এ্যাঙ্গেল ও পাইপসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। এসময় নয়ন মিয়া প্রধান শিক্ষকের দেয়া স্কুল প্যাডে লেখা একটি প্রত্যয়ন পত্র দেখিয়ে বলেন, তিনি ৪২.৫০টাকা দরে মালগুলি ক্রয় করেছেন। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, আগেও প্রায় ১৩টন মালামাল এবং ইট বিক্রি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন :
বিশ্বকাপের আগে সেঞ্চুরিতে বাবরের রেকর্ড
স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ১৫১৬ টাকা

স্থানীয় বাদল মিয়া বলেন,অল্প অল্প করে যখন তখন ইট বিক্রি করা হয়। মাঝে মধ্যে সন্ধা বেলায়ও ইট বিক্রি করতে দেখা গেছে বলে তিনি জানান। এলাকাবাসী জোবেদ আলী, ফজর আলী, শওকত আলী, সানোয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম, শাহ আলম প্রামানিকসহ আরও অনেকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম মন্ডল ও সভাপতি দেলোয়ার হোসেন স্কুলটিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছে।

তাদের হিসাব অনুযায়ী ৮হাজার টাকা দরে প্রায় ৬০হাজার ইট ৪লাখ ৮০হাজার টাকা ও ৪২.৫০টাকা দরে প্রায় ২০হাজার কেজি লোহা ৮লাখ ৫০হাজার টাকা মিলে মোট ১৩লাখ ৩০হাজার টাকা হরিলুট করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক মো. জহুরুল ইসলাম মন্ডল জানান,নদী ভাঙ্গনের কারনে স্কুল ভবনের মালামাল নিলাম না করলেও ম্যানেজিং কমিটির সকলে মিলে বিক্রি করা হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে আহ্বায়ক করে একটি বিক্রয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটি ভবন ভেঙ্গে মালামাল বিক্রি করেছে।

স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো.দেলোয়ার হোসেন জানান,সকলের সাথে আলোচনা করে আমরা কমিটির মাধ্যমে মালামাল বিক্রি করেছি। নিলাম দিলে দাম কম হতো তাই নিলাম না দিয়ে বেশী দামে বিক্রি করেছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আলী বলেন, দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আমাকে বিষয়টি জানায়নি তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাহবুবুর রহমান জানান,এ বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

অক্টোবর ০১.২০২১ at ১৪:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ফহ/রারি