দিনাজপুরে শিশুরা এখন শ্রমিক

দিনাজপুরে শিশু এখন শ্রমিক। শিশুর শ্রমে হারিয়ে যাচ্ছে দুরন্ত শৈশব। সচেতনতায় পারে শিশু শ্রম বন্ধ করতে। কিন্তু সচেতন মহল আর স্থানীয় প্রশাসনের সচেতনতার অভাবে দিনাজপুরের দক্ষিণাঞ্চালের ঘোড়াঘাট, নবাবগঞ্জ, ফুলবাড়ী, হাকিমপুর ও বিরামপুর উপজেলায় দিনদিন শিশু শ্রমিকের সংখা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

অভাব ও বাড়তি আয়ের জন্য এলাকার হাজার হাজার শিশু বেচেঁ থাকার তাগিদে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করেছে। দরিদ্রতার কারণে এ সব শিশু স্কুল ছেড়ে বিবিন্নভাবে শ্রম বিক্রি করে আয় রোজগার করছে।

দিনাজপুরের দক্ষিণাঞ্চালের উল্লেখিত বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে পিতা, মাতাহীন অনাথ শিশু সহ স্বল্প ও নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুরা বিভিন্ন পেশায় কঠোর পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এ সব শিশুর অধিকাংশের বয়স ৮/১০ বছর। যে বয়সে বই খাতা,কলম নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সে বয়সে তারা পেটের ক্ষুধা নিবারণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।

পিতা,মাতার অভাবী সংসারে সাহায্য করছ্। দেশের শ্রম আইনে ১৪ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের শ্রম নিষিদ্ধ করা হলেও এক শ্রেনির স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি কম মজুরীতে ঝুকিপূর্ণ কঠোর পরিশ্রম করে নিচ্ছে। এদের মধ্যে স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিশুদের সংখ্যা বেশ্।

সমাজের অন্য শিশুদের মত লেখাপড়া শিখে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইচ্ছা তাদেরও ছিল। এরা স্কুলে লেখাপড়া করতো কেউ তৃতীয় শ্রেণি কেউ পঞ্চম শ্রেণি তার উর্দ্ধে শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেছে। কিন্তু পরিবারের অভাব অনটন ও অভিভাবকের মানসিকতা ও মনোভাব তাদের সে আশা-আকাংখা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে।

আরো পড়ুন :
বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়োগ দেবে ২০০ জন
স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ১৫১৬ টাকা

এ কারণে তারা লেখা পড়া করতে পারেনি। এখন তারা শিশু শ্রমিক। এসব শিশু মটর সাইকেল গ্যারেজ, বাস-ট্রাক, হোটেল রেঁঁস্তোরা, চা ষ্টল, মুদি দোকান, ওয়েলডিং কারখানা, কৃষি, ইট ভাঙ্গা সহ বিভিন্ন কঠিন ও ঝুঁকিপূর্র্ণ কাজ করছে।

তারা অনেকেই ন্যায্য প্রাপ্ত মজুরী থেকে বঞ্চিত। এক শ্রেণির অর্র্থলিপ্সু মালিকরা এ সব শিশুর ন্যায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত করে অর্থের পাহাড় গড়ছে। দারিদ্রতার কষাঘাতে ক্রমান্বয়ে শিশু কিশোর শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সরকারী প্রাথমিক স্কুলসহ মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে দিন দিন ছাত্ররা দারিদ্রের কারণে ঝরে পড়ছে। উপজেলা গুলোতে সরকারী প্রাথমিক স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে কতজন ছাত্র ঝরে পড়েছে তার পরিসংখ্যাান কর্তৃপক্ষের জানা নেই।

উপজেলাগুলোতে ঝরে পড়ার কারণে কত হাজার শিশু শ্রমিক রয়েছে, উপজেলা সমাজ সেবা, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে পরিসংখ্যান নেই। শিশুরা তাদের প্রত্যেকের আশা লেখাপড়া করে বড় হয়ে মানুষের মত মানুষ হওয়া। কিন্তু দারিদ্রতা সে আশার কপালে পানি ঢেলে দিয়েছে।

যদি দারিদ্রতা বিমোচন করে তাদের আবার স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া যায়, তবে তারা যেমন উপকৃত হবে তেমনি দেশও উপকৃত হবে ।

সেপ্টেম্বর  ২১.২০২১ at ১৩:০৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মাউআমা/রারি