এ সন্তানের দায় কে নেবে?

সাভারে গার্মেন্টস মালিকের ধর্ষণের শিকার কিশোরী এবার কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। শিশুটির নাম রাখা হয়েছে “রাণী”। তার মুখ দেখে মায়ের চোখে-মুখে হাসি ফুঁটলেও এ সন্তানের বাবার পরিচয় দেবে কি? এই ভেবে হতাশা আর কান্নায় দিন যাচ্ছে ধর্ষিতার।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার সাভারের ছায়াবীথি এলাকার ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর বাবা সেলিম জন্মের আগেই পালিয়ে গেছে তার মা’কে ছেড়ে।

২ বছরের সন্তান রেখে মা রিক্তা বেগমেরও বিয়ে হয় অন্যত্র। জম্মের পর বাবা-মা হারা মেয়েটি নানা-নানীর কাছে মানুষ হয়। বাবা-মা’কে কখনও দেখেনি সে। ১২ বছর বয়সে দারিদ্রতার কারণে সে চাকরী নেয় বাংলার মার্ট এ্যাপারেলস লিমিটেড নামে এলাকার একটি পোশাক কারখানায়।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইয়ূম চাকরী থেকে ছাটাই করার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে কিশোরীকে। প্রায় ৮ মাস আগে কিশোরী বুঝতে পারে যে, তার পেটে সন্তান এসেছে।

আরো পড়ুন :
সর্বোচ্চ যে সাজা হতে পারে রাসেল দম্পতির
নতুন শিক্ষাক্রমে হিজড়াদের জন্য যা থাকছে

বিষয়টি গার্মেন্টস মালিক কাইয়ূমকে জানালে তিনি কিশোরীর দায় নিতে চান না। এভাবে মায়ের পেটে বাড়তে থাকে একটি শিশু। বিগত প্রায় ৭ মাস আগে ধর্ষিতা কিশোরী নিরুপায় হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সে মামলায় পুলিশ বাংলার মার্ট এ্যাপারেলস লিমিটেডের মালিক কাইয়ূমকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাইয়ূম এখনও কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে, গত ১৪ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিশোরী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। কন্যার নাম রাখা হয় আলিফা আক্তার রাণী। সাভারের জীর্ণ ঘরে রানীকে নিয়েই এখন সময় কাটে কিশোরীর।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর শহিমুদ্দি বৃদ্ধ ও বেকার। নানী আফরোজা বেগম মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান। তারা বলেন, নাতনীর কোলের শিশুটি আমাদের সংসারকে আলোকিত করেছে। কিন্তু এই সন্তানের পিতৃ পরিচয় কি হবে? বর্তমান সমাজে এক কিশোরীর কোলে এমন একটি সন্তান বড় হলে কি হয় তা সবারই জানা আছে। মানুষের কথার কারণে এখন আমরা ঘর থেকে বের হতে পারি না। ধর্ষণের পর জন্ম দেয়া শিশুটি নিয়ে কিশোরীর সময় কাটলেও তার প্রশ্ন, “এ সন্তানের দায় কে নেবে?”

সেপ্টেম্বর  ১৮.২০২১ at ১৭:৪৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সাহো/রারি