শিক্ষার্থীদের আগমনে প্রাণ ফিরে পেল সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজ

দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর খুলেছে টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজ, শুরু হয়েছে ক্লাস। শিক্ষার্থীদের কাছে এটা যেন অনেক বড় একটা বিজয়।

করোনার কারণে ঘরবন্দি জীবন পেরিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ফিরেছে তাদের প্রিয় ক্লাসরুমে। সোমবার তাদের মাঝে ছিল আনন্দের ঢেউ। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়, টানা ১৭ মাস পর ফের খুলেছে বিদ্যালয়।

শিক্ষকরা ফুল, চকলেটসহ সাদরে বরণ করেছেন প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের। সবার মুখে ছিল মাস্ক, চোখে খুশির ঝিলিক। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, হাত ধুয়ে, স্যানিটাইজ করে সুশৃঙ্খল ভাবেই নিজ বিদ্যাপীঠে প্রবেশ করে ছাত্র, ছাত্রীরা।

ক্লাস শেষে সারিবদ্ধভাবে শৃঙ্খলার সঙ্গে আবার বের হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বিদ্যালয়ে যাওয়ার উত্তেজনায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেনি অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজের আঙিনা।

অবশ্য সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে ক্লাস শুরু না হওয়ায় প্রথম দিকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি সবাই। এদিকে স্কুল-কলেজ খোলায় টঙ্গীর বিভিন্ন রাস্তায় সকাল থেকেই গাড়ির চাপ ছিল বেশি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ রেদোয়ান আহমেদ, মোঃ হাছিফ, অভিরূপ চৌধুরী, মোঃ নাফিজ ও আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানায়, নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হলেও বাসায় থাকতে থাকতে বোর হয়ে গিয়েছিলাম।

আরো পড়ুন :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গভীরে নিম্নচাপ, জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
দীর্ঘপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা উত্তর কোরিয়ার

সারাদিন বাসায় বসে পড়া আর গেম খেলা ছাড়া যেন সব অচেনা লাগছিলো। খুব মিস করেছি আমাদের বন্ধু বান্ধব, শিক্ষক আর প্রাণপ্রিয় বিদ্যালয়কে। বহুদিন পর বিদ্যালয়ে আসার পর শিক্ষকরা আমাদের ফুল, চকলেট দিয়ে বরণ করে নিয়েছে। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা, চারপাশ এতো পরিছন্ন দেখে খুব ভালো লাগছে। বিদ্যালয়ের প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরো বেড়ে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ডি,এম ফারুক বলেন, আমরা নিয়মিত অনলাইন ক্লাস করালেও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসার পর মনে হচ্ছে বিদ্যালয়ে প্রাণ এসেছে। দীর্ঘদিন পর হলেও প্রায় ৯৫ ভাগ শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশগ্রহণ করেছে। সকল শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে ক্লাসে আসছে। বিদ্যালয়ের ফুলের টব, আঙিনা, সকল জায়গা পরিষ্কার পরিছন্ন রাখা হয়েছে। ম্যাক্স, স্যানিটাইজারের ব্যাবস্থা রয়েছে। ময়লা ফেলার জন্য বক্স দেওয়া হয়েছে।

সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, সরকারের দেওয়া সকল নির্দেশনা মেনে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও মেধার সঠিক বিকাশ সাধন, নৈতিকতার আত্মবিশ্বাসী সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে বিজ্ঞানভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রম, পদ্ধতিগত শিক্ষা, নিয়মিত পরীক্ষা, ধারাবাহিক অনুশীলন, অনলাইন ক্লাস, আধুনিক শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার পূর্বক পাঠদান করা হয়্ সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজে।

রাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল শিক্ষা পরিবেশ। সুপরিকল্পিত শিক্ষা পদ্ধতি, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক মন্ডলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখানে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে ।

বিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীন পরীক্ষা সহ পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী পাঠদান। এছাড়া সকল পাবলিক পরীক্ষায় বিগত বছরগুলোতে প্রায় শতভাগ সাফল্য আমাদের একটি বড় অর্জন । তবে শুধু ভাল ফল অর্জনই নয়, মানসম্মত শিক্ষা ও প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য ।

আমরা চেষ্টা ও আশা করছি অচিরেই এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের প্রতিভা বিকাশে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখার পাশাপশি নিজেদেরকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। তাছাড়া আমাদের আইটি (অনলাইন) বিভাগকে শক্তিশালী করা হয়েছে। আমাদের প্রতিদিনের কার্যক্রম (নোটিশ) ছাত্র, ছাত্রী ও অবিভাবকদের সুবিধার্থে অনলাইনে প্রচার করা হয়।

এছাড়া বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বকেয়া অভিবাবকরা যেন ঘরে বসে প্রদান করতে পারে সেজন্য বিশেষ অনলাইন সেবার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সকল শিক্ষার্থীর জীবন বৃত্তান্ত ডাটাবেজের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা রয়েছে। আশারাখি সকল শিক্ষক, ছাত্র, ছাত্রী ও অভিবাবকদের সহযোগীতায় আগামী দিন গুলোতে সরকারী নিয়ম মেনে আমাদের সকল কার্যক্রম চলবে।

ইতি মধ্যে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন জেলা শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ শাহরিয়ার বেনজিস।

সেপ্টেম্বর  ১৩.২০২১ at ১৮:০৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শেরাহা/রারি