তীব্র স্রোতের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই পদ্মা পার হচ্ছে যাত্রীরা

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি এবং স্পিডবোট বন্ধ থাকায় পদ্মা পার হতে লঞ্চ ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যম নেই। বৈরী আবহাওয়া বা তীব্র স্রোতের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই পদ্মা পার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।

এদিকে পদ্মায় স্রোতের তীব্রতা বেশি থাকায় লঞ্চ চলাচলও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে সাধারণ যাত্রীরা জানান। তীব্র স্রোত ঠেলে অনেক সময় লঞ্চ গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরিও হয়। স্রোতের তীব্রতায় দিক ঠিক রাখতেও বিপাকে পড়তে হয় মাঝে মধ্যে।

জরুরি প্রয়োজন বা বৈরী আবহাওয়ায় লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকলে ফেরিতে পার হওয়ার সুযোগ ছিল যাত্রীদের। কিন্তু পদ্মায় স্রোত থাকায় গত মাস থেকে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। এছাড়া গত ৪ মে থেকে বন্ধ রয়েছে স্পিডবোট চলাচলও। এখন পদ্মা পার হতে লঞ্চই একমাত্র ভরসা। তাও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার আগেই।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মায় স্রোতের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চ চলাচলের জন্য সময়সীমা বেধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে রাত ৮টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করলেও সম্প্রতি সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের নতুন সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে যাত্রীদের সময় মেনে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য নৌযান বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে রয়েছেন যাত্রীরা। ফেরি বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে দীর্ঘ পথ ঘুরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া হয়ে ঢাকায় যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।

ঢাকা থেকে পাঁচ্চর আসা লঞ্চের যাত্রী রাবেয়া বেগগম বলেন, শিমুলিয়া থেকে লঞ্চ ছাড়ার পর স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের লঞ্চটি এগুতে পারছিল না। দীর্ঘ সময় চেষ্টা করে অবশেষে পদ্মাপাড়ি দেয়। পদ্মায় স্রোতের কারণে লঞ্চে যাতায়াতও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মিপুর-২ গামী আশরাফুল জানান, লঞ্চ ভোর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চালু থাকে। কিন্তু জরুরি দরকারে ঢাকা যেতে হলে আর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার একটু পরে ঘাটে এলে আর লঞ্চ পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ফেরিও বন্ধ। সব মিলিয়ে এ নৌরুটে ভোগান্তি পিছু ছাড়ছে না।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, নৌরুটে স্রোতের তীব্রতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় গত ১৮ আগস্ট বেলা আড়াইটা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নৌরুটে স্বাভাবিক সময়ে চারটি রো রোসহ ১৬ থেকে ১৮টি ফেরি চলাচল করে। এছাড়া স্রোতের তীব্রতার কারণে ঝুঁকি এড়াতেই সন্ধ্যা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

আরো পড়ুন :
কামার-কুমার, ফেরিওয়ালা, ভূমিহীন কৃষকও পাবেন জামানতবিহীন ঋণ
রাজধানীতে ভিকারুননিসা স্কুলের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইব্লিউটিএ) বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সব লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিক রয়েছে। ফেরি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের লঞ্চে পার হওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। আমরা ঝুঁকি এড়াতে সন্ধ্যার পর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখছি।

সেপ্টেম্বর  ০৬.২০২১ at ১১:১০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমদেহো/রারি