নরসিংদীতে ব্যারিস্টার তৌফিকের বিরুদ্ধে যুবলীগকে জিম্মি করা ও গ্রুপিং সৃষ্টির অভিযোগ!

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার সন্তান ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র পরিচয়দানকারী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ব্যারিস্টার তৌফিকুর রহমান সূজনের সাম্প্রতিক কর্মকা- নিয়ে বিব্রত নরসিংদী জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) নরসিংদী পৌরসভার অর্ন্তগত উপজেলা মোড়ে যুবলীগের ব্যানারে তৌফিকুর রহমান সূজনের আয়োজনে ঈদ সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী, সাবেক ছাত্রদল নেতা এবং জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা মামলার আসামি মিয়া মোহাম্মদ মঞ্জুর।

লোকমান হত্যা মামলার অপর চার্জশীটভুক্ত আসামি মোবারক হোসেন ওরফে মোবা, নরসিংদী পৌর নির্বাচনে যারা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন রৌজদী, রিপন সরকার, মোবাইল প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জুবায়ের আহমেদ জুয়েল ও আগুর মোল্লা, টুটুল শিকদার সহ আরো অনেককেই উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।

নরসিংদী শহরে এই অনুষ্ঠান করা হলেও উপস্থিত ছিলেন না জেলা যুবলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ জেলা যুবলীগের কার্যকরী কমিটির কোন নেতৃবৃন্দকে। এই অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য বেলাব-মনোহরদী থেকে সাদীর নেতৃত্বে একটি বহর ও রায়পুরা ব্যারিস্টার তৌফিকের এলাকা থেকে একটি খ- মিছিল আসতে দেখা যায়।

পোগ্রামে জেলা যুবলীগের কেউ উপস্থিত না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ বলেন, ‘এই পোগ্রাম শহরে অনুষ্ঠিত হলেও আমি কিছুই জানতাম না। তৌফিক সাহেব সহ অন্য কেউ জেলা যুবলীগকে অবহিত করেননি।’

জেলা যুবলীগের সভাপতি বাবু বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী জানান, ‘যুবলীগ বঙ্গবন্ধুর আর্দশের একটি বৃহৎ গঠনতান্ত্রিক ঐতিহ্যবাহী যুব সংগঠন। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সম্মানিত চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক এর নির্দেশনায় সকল কর্মসূচি আমরা যথাযথভাবে পালন করে থাকি। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আমরা মানবিক সহায়তা নিয়ে একের পর এক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। কিন্তু এ পোগ্রাম জেলা যুবলীগের কোনো পোগ্রাম নয় এবং এই পোগ্রাম সম্পর্কে আমাদের কেউ অবহিত করেননি।

এছাড়া জেলা যুবলীগের কমিটিতে থাকা একাধিক নেতৃবৃন্দ অসন্তোস প্রকাশ করে বলেন, তৌফিক সাহেব সাংগঠনিক নিয়ম শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্রকে তোয়াক্কা না করে যুবলীগের মধ্যে গ্রুপিং এবং নিজস্ব বলয় তৈরি করার চেষ্টা করছে। ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে যোগদানকারী সাবেক ছাত্রদল নেতা মিয়া মোহাম্মদ মঞ্জুরকে বিভিন্ন জায়গায় নরসিংদী জেলা যুবলীগের ভবিষ্যৎ কর্ণধার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে জনে জনে ফোনে ডেকে ঢাকাস্থ বাসায় নিয়ে যান এবং নরসিংদী জেলার সকল ওয়ার্ড, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা কমিটি তিনি নিজের মনমতো করবেন বলে সবাইকে বলে বেড়াচ্ছেন। যুবলীগ করতে হলে তৌফিক সাহেবের সৈনিক হিসেবে ওনার গ্রুপ করতে হবে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক যুবলীগের এক কর্মী অভিযোগ করে বলেন, ‘যে মানুষটি ওয়ান এলিভেনের সময় প্রাণপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন কারারুদ্ধ ছিলেন, তখন প্রিয় নেত্রীকে মাইনাস ফর্মূলায় মাহমুদুর রহমান মান্নার জোটে যোগ দিয়েছিলেন। সেই তৌফিক সাহেব আজকে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র পরিচয় দিয়ে জেলা যুবলীগের বাপ-মা সেজে অসাংগঠনিক-অগঠনতান্ত্রিক রাজনীতি করার অপচেষ্টা করছে।

এসময় তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, এই বিষয়গুলো কেন্দ্রীয় যুবলীগের সুযোগ্য চেয়ারম্যান শিক্ষিত, মার্র্জিত, বিচক্ষন ব্যাক্তি শেখ ফজলে শামস পরশ এবং তৃনমূল থেকে উঠে আসা বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাইনুল খান নিখীল সঠিকভাবে জানতে পারলে নিশ্চয়ই তৌফিক সাহেবের এই দৌরাত্ম বন্ধ হবে।’

এ ঘটনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ জেলাজুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ব্যারিস্টার তৌফিকুর রহমান সূজনের সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলেননি।

জুলাই,১৬.২০২১ at ২১:৪০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমটি/এসআর