বীরগঞ্জে দেবোত্তরের সম্পত্তি ও টাকা আত্মসাত

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে শ্রী শ্রী রাধা রমন জিউ মন্দিরের কোটি কোটি টাকা’র দেবোত্তর সম্পত্তি কুক্ষিগত করে নামে বেনামে জবর দখল ও আত্মসাত করে কথিত পুত্র নগেন্দ্র নাথ রায়, এলাকাবাসী উতপ্ত রয়েছে, সেখানে প্রশাসনিক পদক্ষেপ প্রয়োজন, এতে যে কোন মহুর্তে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়নের মন্দিরের উন্নয়নের কথা বলে দেউলী মৌজার শ্রী শ্রী রাধা রমন জিউ মন্দিরের কোটি কোটি টাকা’র দেবোত্তর সম্পত্তি কুক্ষিগত করে নামে বেনামে জবর দখল ও আত্মসাত করে চলেছে বহিরাগত কেনকেনু অরফে রমনী বর্মনের কথিত পুত্র নগেন্দ্র নাথ রায়।

বর্তমানে জরাজীর্ণ রাধা রমনজিউ মন্দির জমিজমা নতুন ভাবে আরও আত্মসাতের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অবৈধভাবে দেবোত্তর সম্পত্তি জবর দখল করতে নগেন এলাকায় গড়ে তুলেছে একটি প্রভাবশালী গ্রুপের নেটওয়ার্ক। গ্রুপটি একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে প্রতিবাদি গ্রুপটিকে হেনস্তা করার পায়তারা অব্যাহত রেখেছে।

সকল অপতৎপরতা বন্ধ করাসহ দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারে মাঠে নেমেছে ওই মন্দিরের বর্তমান কমিটির সভাপতি বাবু রঞ্জন চন্দ্র বর্মন, সাধারন সম্পাদক অক্ষয় বর্মন, সেবায়েত হরিশ চন্দ্র অধিকারীসহ স্থানীয় সোনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ।

ঐ কারনে এলাকায় পরিস্থিতি রয়েছে উতপ্ত, যে কোন মহুর্তে দূঘটনা ঘটতে পারে। আর তাই সেখানে প্রশাসনিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। মন্দির কমিটির সভাপতি রঞ্জন রায় জানায়, স্বর্গীয় জগমোহনের পুত্র স্বর্গীয় রমনী মোহন বর্মন জীবদ্দশায় ১৭.৯৪ একর আবাদি দলা ও ডাঙ্গা মুল্যবান জমি ১২/১৯৫৩ নম্বর দলিল মুলে শর্ত সাপেক্ষে রাধা রমন জিউ মন্দিরের নামে জমিগুলি হস্তান্তর করেন।

কিন্তু সমুদয় সম্পত্তি বহিরাগত পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার বসুনিয়াহাট এলাকার বাসিন্দা কেনকেনুর ছেলে নগেন্দ্র নাথ রায় কথিত পুত্র সেজে কৌশলে ভুয়া মালিক সেজে অবৈধভাবে ভোগ দখলিয় হয়ে তার নিজের ইচ্ছে মত জমি বেচা-কেনা সহ রথবাজারে ৮৮ জনকে দোকান ঘরের পজিশন এক কালিন বিক্রয় করে।

মন্দিরের নামে থাকা দেবোত্তর সম্পত্তিতে পাকা ও আধা পাকা দোকান বানিয়ে নিজে এবং কতিপয় ভুমিদস্যুদের সাথে নিয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার ফসলাদি ও দোকান থেকে উপার্জন হলেও সেগুলো আত্মসাত করে চলেছে নগেন চক্রটি। এর সুফল তারা ভোগ করলেও একেবারে বেহাল দশা মন্দিরের।

প্রতিপক্ষ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে নগেন অতিঃ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিনাজপুর আদালতে মন্দির কমিটির সদানন্দ বর্মন, সেবায়েত হরিস চন্দ্র অধিকারী সহ অন্যান্যদের বিবাদী করে ৪০৯পি/১৮ নম্বর ১৪৪ ধারায় মামলা আনয়ন করেন।

বিজ্ঞ আদালত ২৮ ফেব্রুয়ারি’২০২১ ইং আদেশ নামায় উল্লেখ করেন সিএস খতিয়ান ২০২ এসএ খতিয়ান ২১৪ দাগ নম্বর ৫৪৮ সহ অন্যান্য দেবোত্তর জমির মালিক জেলা প্রশাসক। তাছাড়া নগেন নিজেকে রমনী বর্মনের পালিত বা দত্তক পুত্র দাবী করলেও স্বপক্ষে কোন প্রমান দেখাতে পারেন নি। সম্পত্তিতে বাদির অর্থাৎ নগেন্দ্র নাথের কোন স্বত্ত্ব দখল না থাকায় মামলাটি নথিজাত করা হয়।

সেবায়েত হরিশ চন্দ্র অধিকারীর অভিযোগে সরে জমিনে গেলে মন্দিরটি মারাত্মক জড়াজির্ণ অবস্থায় পরিত্যাক্ত ঘরের মত হয়ে পড়ে আছে। এ সময় হরিশ চন্দ্র অধিকারী ও এলাকাবাসীরা জানায়, সম্পত্তি জবর দখল ও আত্মসাতে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে ধুরন্ধর যাত্রা পালার নায়েক নগেন নিজেই মন্দির থেকে মুর্তি চুরি করে সেবায়েত হরিশ চন্দ্র অধিকারী সহ তার সহকর্মী সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার পায়তারা করছে।

ইতি পূর্বেও সে মিথ্যা মামলা করে এলাকাবাসীকে হয়রানী করেছে। বর্তমান মন্দির কমিটি ও সেবায়েত হরিশ চন্দ্র অধিকারীর পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্য প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেছেন। নগেন চন্দ্র কে পাওয়া না গেলে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানায়, মন্দিরের বিগ্র চুরি হয়েছে তাই থানায় এসেছি অভিযোগ দিতে।

একই সাথে তিনি আরো জানায়, ১৯৮২ সাল থেকে প্রতিপক্ষ আমাকে সর্বশান্ত করার জন্য অনেক চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি মামলা করেছি এবং চলমান আছে। মামলায় হেরে গেলে আমি যোগ্য লোকজন নিয়ে কমিটি বানিয়ে পরিচালনা করব।

আরো পড়ুন:
যশোরে এমপি নাবিলের পক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
পশুরহাট ও কোরবানির বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২৩ নির্দেশনা

এ ব্যপারে বীরগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মহেশ চন্দ্র রায় এবং সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র দেবশর্মা ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে অবিলম্বে দেবোত্তর সম্পতি উদ্ধারে মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, দিনাজপুর -১ আসন ও বাংলাদেশ হিন্দু ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্ট্রের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন শীল গোপাল সহ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।

জুলাই,১১.২০২১ at ১২:২৮:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমটি/এসআর