লকডাউনের মাঝেও মাইকিং করে অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে লকডাউনের মাঝেও মাইকিং করে গরুর মাংস বিক্রি করা হয়েছে। তাও আবার গরুটি ছিল অসুস্থ। কম দামে অসুস্থ গরুর মাংস কিনতে লকডাউন উপেক্ষা করে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে মাংস বিক্রি বন্ধ করে দেন। এ সময় জরিমানা হিসেবে ২০ কেজি মাংস এতিমখানায় দেয়া হয়। উপজেলার সেন্টার মোড়ে ১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, দৌলতপুর কলেজপাড়ার আবু তালেব নামে এক ব্যক্তির পোষা একটি গরু কয়েকদিন আগে ওপর থেকে পড়ে গেলে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গরুটির এক পা ভেঙে যায়। চিকিৎসা দেয়া হলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গরুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক প্রায় ৫ মণ ওজনের ওই গরু জবাই করে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে উপজেলার সেন্টার মোড়ে গরুটি জবাই করে মাংস বিক্রি শুরু হয়। এরপর ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মাইকিং করা হয়। সেই মোতাবেক ৪শ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির খবর জানিয়ে তা মাইকে প্রচার করে বেড়ানো হয়। অপেক্ষাকৃত কম দামে মাংস কেনার জন্য আশপাশের এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ লকডাউন উপেক্ষা করে সেখানে ভিড় জমায়।

পরে রাতে এ ঘটনার খবর পেয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার সেখানে অভিযান চালান। ইউএনওর উপস্থিতি টের পেয়ে মাংস কিনতে যাওয়া লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যান। তবে ইউএনও যাওয়ার আগেই ৪শ টাকা কেজি দরে প্রায় ৪ মণ মাংস বিক্রি হয়ে যায় বলে জানা গেছে। এ সময় লকডাউন অমান্য করে মাংস বিক্রির অভিযোগে ২০ কেজি মাংস জরিমানা করা হয়। পরে জরিমানার সেই মাংস স্থানীয় দুটি এতিমখানায় দিয়ে আসেন প্রশাসনের লোকজন।

এদিকে বৃহস্পতিবার সাতদিনের সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে দিনভর থেমে থেমে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় মানুষ এমনিতেই ঘর থেকে বের হতে পারেনি। ফলে আষাঢ়ের এই প্রবল বর্ষণই অনেকটা লকডাউন কার্যকর করে দিয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। তারপরেও ইউএনও শারমিন আক্তার এবং ওসি নাসির উদ্দিন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা চালিয়েছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, চলমান লকডাউনে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের নির্দিষ্ট সময়ের পরে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছিল। খবর পরে আমরা সেখানে গিয়ে জরিমানা হিসেবে ২০ কেজি মাংস এতিমখানায় দেয়ার ব্যবস্থা করি। একই সঙ্গে অবশিষ্ট মাংস বিক্রি বন্ধ করে দেই। এছাড়া লকডাউন অমান্য করায় আরো কয়েকটি স্থানে জরিমানা করা হয়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে সবাইকে লকডাউন মেনে ঘরে থাকার অাহ্বান জানিয়েছেন ইউএনও।