ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে আদালতে মামলা দায়ের

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসারপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমানের পরিবারকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে একটি কুচক্রী মহল। এর ধারাবাহিকতায় ওই মহলটি মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের জমি-জামা দখল করে নিয়েছে,কেটে নিয়েছে হয়েছে জমির গাছ, দাবি করা হয়েছে বড় অংকের চাঁদা না দিলে হত্যার হুমকী।

অভিযোগ এর ভিক্তিতে শুক্রবার সরে জমিনে গিয়ে এমন তথ্য মিলেছে। মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান (৮০) জানান দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ অবস্থায় তার স্ত্রীকে নিয়ে ফুরসন্দি গ্রামে নিজ বাড়িতে একটি মাটির ঘরে একাকি বসবাস করছে। তার তিন কন্যা বিয়ের পর সবাই স্বামী-সংসার করছে ও একমাত্র পুত্র সন্তান ঢাকায় চাকুরীরত। তিনি অভিযোগ করেন তিনি অসুস্থ হওয়ার কারনে বাড়িতে তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকার সুযোগে একই গ্রামের প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকা দুর্বৃত্তর তার পিতার নামিয় ২৫৮ নং ফুরসন্দি মৌজার ৩৬৩ নং দাগের উপর অবস্থিত প্রায় ৭০ হাজার টাকা মুল্যের একটি গাছ কেটে নেয়।

আরো পড়ুন:
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল জৈন্তাপুর !! সিলেটেবাসীকে শর্তক থাকার পরামর্শ

তিনি আরো জানান তাদের মিয়া বংশের পক্ষ থেকে একই মৌজার ৩৬৪ নং দাগের ২৪ শতাংশ জমি গ্রামের ঈদগাঁর নামে দান করেছে। কিন্তু ওই মহলটি ঈদগাঁর অধিকাংশ জায়গা জোর দখল করে নিয়েছে। তিনি আরো অভিযোগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্য হয়েও তার তিনি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এক গ্রামের মৃত বাবর আলীর পুত্র ভুমি দস্যু মধু, মোহন ও অর্শ্বিনী কুমারের পুত্র উৎপল গং তার বসতবাড়ি জোর করে নামে মাত্র মুল্যে ক্রয় করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল।

তাতে রাজি না হওয়ায় তারা তার কাছে ৫ লক্ষ চাঁদা দাবী করে মধু গং। তিনি দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ করতে না পারায় গত ৬ এপ্রিল দুপুরে মধু, মোহন ও উৎপল লাঠি-শোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে চড়াও হয়। এ সময় তারা তাকে এবং তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও কন্যা শাহনাজ পারভীনকে মারধর করে এবং স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও কন্যা শাহনাজ পারভীন বিউটির শ্লিলতাহানী করে এবং তাদের গলায় থাকা দুইটি সোনার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এছাড়া চাঁদা না দিলে তাকে খুন করার হুমকী দিয়ে চলে যায়। এ বিষয়ে মুৃক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান ঝিনাইদহ অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল আদালতে গত ১২ মে তিন জনকে আসামী করে ৪৪৭/৩২৩/৩৫৪/৩৭৯/৩৮৫/৫০৬ দঃবিঃ আইনে মামলা দায়ের করে যাহা ১৬-০৫-২০২১ তারিখ আমলে নেওয়া হয়। ১৮ মে পুলিশ আসামীদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এরপর ২০ মে তাদের সহযোগী হালিম, কামাল কাজি, সোনালী কাজি জসিম, জায়েদা রেজাউল ও ইবরা একদল লোক তাদের বসতবাড়ী ঘেরাও করে গালি-গালাজ করে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকী প্রদান করে এবং মামলা তুলে নেওয়া না হলে খুন করার হুমকী দেয়।

এছাড়া ওউ গং এই ঘটনায় কেউ সাক্ষ্য প্রদান করলে তাদেরকেউ দেখে নেয়ার হুমকী দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে তার পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতার মধ্যে দিন যাপন করছে। তিনি বিষয়টি মাননিয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং স্থানিয় প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে কামাল কাজি তাদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন সবটায় তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মাত্র।

এ বিষয়ে ফুরসন্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড.আব্দুল মালেক ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন তিনি অনেকবার বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেছেন কিন্তু ওই গং কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।