দৌলতপুর থানায় বসেছে পুলিশের অস্ত্র চৌকি

গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে উগ্রবাদী গোষ্ঠী বা অন্য কোনো অপশক্তির হামলার আশঙ্কা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষে রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায়ও পুলিশের অস্ত্র চৌকি বসানো হয়েছে। থানার অভ্যন্তরে কয়েকটি পয়েন্টে বালুর বস্তা দিয়ে চৌকি তৈরি করে এবং থানার ছাদের ওপর এই বিশেষ পাহারা দেয়া হচ্ছে। এসব পয়েন্টে সার্বক্ষণিক অবস্থান নিয়ে চাইনিজ রাইফেল তাক করে পাহারা দিচ্ছে পুলিশ। রয়েছে অন্য অস্ত্রও।

জানা যায়, বাড়তি নিরাপত্তার অংশ হিসেবে দৌলতপুর থানার অভ্যন্তরে কয়েকটি পয়েন্টে চৌকি তৈরি করে চাইনিজ রাইফেলের পাহারা বসিয়েছে পুলিশ। এর বাইরে অন্য ভারি অস্ত্রও রয়েছে। যেখান থেকে সার্বক্ষণিক সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। গত তিনদিন আগে (১০ এপ্রিল) কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম দৌলতপুর থানা পরিদর্শনে আসেন। ওইদিন থেকেই এ থানায় এই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কৌশলগত কারণে বিষয়টি প্রকাশ করেনি এখানকার পুলিশ। দেখিয়েছে পুলিশের মহড়া হিসেবে।

থানার প্রবেশ পথের ডান দিকে গোল ঘরের সামনে বালুর বস্তা দিয়ে চৌকি তৈরি করে সেখানে চাইনিজ রাইফেল তাক করে সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া চারতলা থানা ভবনের ছাদের ওপরে চাইনিজ রাইফেলের পাহারা বসানো হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে একাধিক পুলিশ সদস্যকে এই বিশেষ অস্ত্র পাহারায় রাখা হয়েছে। এসব প্রহরা পয়েন্টে পুলিশ সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে ডিউটি করছেন, রাখছেন অস্ত্র তাক করে। তবে দৃশ্যমান এই দুটি পয়েন্ট ছাড়া পুলিশের তরফ থেকে গোপনীয়তা বজায় রাখার যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে অপর পয়েন্টগুলোর স্থান নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। থানা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চারতলা থানা ভবনের ছাদের ওপর পুলিশের অস্ত্র পাহারা -সংগৃহীত ছবি।

দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল আলম মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাতে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী বাড়তি নিরাপত্তার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে থানার অভ্যন্তরে কয়েকটি পয়েন্টে চাইনিজ রাইফেলসহ অন্য অস্ত্রের পাহারা বসানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে লাইট মেসিনগান (এলএমজি) দিয়েও পাহারার ব্যবস্থা করা হবে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ধরে এই পাহারা চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে দুটি পয়েন্ট দৃশ্যমান রাখা হয়েছে। অপর কোন কোন পয়েন্টে এ রকম বিশেষ পাহারা দেয়া হচ্ছে তা গোপনীয় বিষয় উল্লেখ করে সঙ্গত কারণেই জানাতে রাজি হননি ওসি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের পর সর্বপ্রথম সেখানকার থানায় থানায় বালুর বস্তা দিয়ে চৌকি তৈরি করে পুলিশের এলএমজি অস্ত্রের পাহারা বসানো হয়। উগ্রবাদীদের থানা হামলার আশঙ্কায় এই বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ। এরপর দেশের আরো কয়েকটি থানায় বাড়তি নিরাপত্তার জন্য একইভাবে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। সর্বশেষ সোমবার (১২ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার কয়েকটি থানাসহ বিভাগীয় শহর রাজশাহী মেট্রোপলিটনের ১২টি থানায় বাঙ্কার তৈরি করে এলএমজি ও চাইনিজ রাইফেলসহ ভারি অস্ত্রের পাহারা বসানো হয়।

এপ্রিল ১৪, ২০২১ at ১১:২৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসআরএস/এমআরএইস