টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় খাল থেকে উদ্ধারকৃত লাশের রহস্য উদ্ঘাটন

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর পশ্চিম থানাধীন তুরাগ নদের শাখা স্থানীয় আন্দারুল খাল থেকে বিগত ১৯ মার্চ একটি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করে জিএমপি টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ। লাশের পরিচয় ও রহস্য উদঘাটনসহ আসামী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পশ্চিম থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডে জড়িত একজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তার দেয়া স্বীকারোক্তিমতে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন না পেয়ে ইসমাইল সরকার (১৪) হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দেয় অপহরণকারী চক্রটি। ইসমাইল রাজধানী তুরাগ থানার কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবার নাম মোহাম্মদ নূর নবী সরকার। তাদের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার ধানগড়া গ্রামে।

সোমবার টঙ্গী পশ্চিম থানা অফিসার ইনচার্জ মো: শাহ আলম গণমাধ্যমকে জানান, বিগত ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় স্থানীয় তুরাগ নদীর খাল শাখা আন্দারুল খালের পানিতে ভাসমান অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরনে নীল রংঙ্গের জিন্সপ্যান্ট এবং নীল রঙ্গের টি শার্ট ছিল। দুই চোখে আঘাতের চিহ্ন ও রক্ত প্রবাহের আলামত ছিল। লাশ পানিতে থাকায় শরীরের বেশির ভাগ জায়গায় ফুলে পচে বিকৃত হয়ে যায়। ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর পর পুলিশ রহস্য উদঘাটনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

মামলার রহস্যা উন্মোচনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ দক্ষিণ উপপুলিশ কমিশনার মো: ইলতুৎমিশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে টঙ্গী পশ্চিম থানার চৌকশ তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইয়াসিন আরাফাত সকল প্রকার প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে রহস্য উদঘাটন এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য কাজ শুরু করে। নিহতের পরিচয় জানার জন্য ভিকটিমের ছবিসহ পুলিশের বিভিন্ন সোসাল পেইজে বেতার বার্তা, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছবি প্রচার করা হয়।

এক পর্যায় তদন্তকালে ডিএমপি তুরাগ থানায় গত ১৮ মার্চ নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি জিডির তথ্য অনুসন্ধানে যায় তদন্তকারী দল। ওই জিডির সূত্র ধরে তুরাগ থানায় কামারপাড়ায় গিয়ে ভিকটিমের বাবা মাকে উদ্ধারকৃত আলামত দেখিয়ে নিহতের পরিচয় সনাক্ত করে। এ সময় পুলিশ নিহতের বাবা মার কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রাহ করে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী আতাউল হোসেন (৩৫) ১১ এপ্রিল রোববার গ্রেফতার করে। আতাউল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের স্বীকার করে এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেফতারকৃত আতাউল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার রামনগর গ্রামের মৃত ইমাম হোসেনের ছেলে।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি জানান, তিনি ও তার দুই সহযোগী ইসমাইলকে অপহরণ করে তার বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে ইসমাইলকে হত্যা করে খালে ফেলে রাখে। নিহত ইসমাইল ঢাকা মেট্রো তুরাগ থানাধীন কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

এপ্রিল ১২, ২০২১ at ১৫:১৫:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসআরএইস/এমআরএইস