গাজর চাষে আগ্রহ বাড়ছে শেরপুরের চাষিদের

উৎপাদন খরচ থেকে লাভ দ্বিগুণ হওয়ায় শেরপুরের চাষিরা গাজর চাষে ঝুঁকছেন। গাজর চাষে সময় এবং খরচ অন্যান্য ফসলের থেকে কম। জমিতে কোনো ধরনের কীটনাশক দিতে হয় না। শুধু জৈব সার ব্যবহার করতে হয়।

জানা গেছে, উচ্চ মূল্যের এ সবজির উৎপাদন বেশি ও দাম ভালো পাওয়ায় জেলা সদরসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় গাজর চাষে চাষিদের আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে গাজর এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

নকলা উপজেলার চাষি আব্দুল মোতালেব জানান, এক থেকে দেড় যুগ আগে আমাদের এলাকার অনেকেই জানত না কীভাবে গাজর চাষ করতে হয়। কিন্তু এখন সবাই গাজর চিনেন। আমরা আমন ধান কাটার পর গাজর লাগিয়েছি। গাজরের খেতে কোনো কীটনাশক দেইনি। কেবল জৈব সার ব্যবহার করেছি।

তিনি আরও বলেন, প্রতি কাঠা জমিতে গাজর চাষ করতে ৩-৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন ৭-৮ হাজার টাকা বিক্রি করব। ৭ কাঠা জমির গাজর থেকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে।

চাষি শামীম হোসেন জানান, ২০১৬ সালে সর্ব প্রথম ৫ শতাংশ জমিতে গাজর চাষ করে ভালো ফলন এবং দাম পায়। পরের বছর আমার দেখাদেখি অন্যান্য কৃষক গাজর চাষ শুরু করেন। অল্প পরিশ্রমে উৎপাদন বেশি ও ভালো দাম পাওয়ায় উপজেলার কয়েকশ কৃষক এরই মধ্যে গাজর চাষ করা শুরু করেছেন।

তিনি আরও বলেন, গাজর গাছের পাতা গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। তাই গবাদি পশুর খাবারের জন্য চাষিরা গাজরের পাতা তুলে তা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করতে পারে।

গাজর চাষি আজগর আলী জানান, গাজর চাষে কম খরচে লাভ বেশি পাওয়ায় আমি নিজেও অন্যদের দেখে গাজর চাষে আগ্রহী হই। আমি ৩০-৩৫ শতাংশ জমিতে গাজর চাষ করছি। বাজারে প্রতি মণ গাজরের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আশা করছি মোটামুটি ভালো লাভ হবে।

শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ডা. মুহিত কুমার দে বলেন, শেরপুর জেলার চরাঞ্চলে বিশেষ করে সদর, শ্রীবরদী ও নকলা উপজেলায় গাজরের চাষ হচ্ছে। শেরপুরের মাটি গাজর চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। এ বছর জেলার প্রায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে গাজরের চাষ হয়েছে। গাজর একটি সম্ভাবনাময় ফসল। গাজরে ভিটামিন এ পরিপূর্ণ থাকায় এর চাহিদা বাজারে প্রচুর।

মার্চ ১৫, ২০২১ at১৬:৪২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আকে/আরআইবি/এমআরএইস