কুৃষ্টিয়ায় প্রথম টিকা নিলেন মাহবুবউল আলম হানিফ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কুৃষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ কুৃষ্টিয়া জেলায় সর্বপ্রথম ব্যক্তি হিসেবে করোনা টিকা নিয়েছেন। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রথমে নিজে টিকা নিয়ে করোনা টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন হানিফ। পরে অন্যরা এই টিকা নেন।

কুষ্টিয়া জেলায় করোনা টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধনের পর আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবউল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি প্রথম থেকে করোনা নিয়ে নেতিবাচক কথা বলে আসছে। তারা বলেছিল করোনার টিকা বাংলাদেশে আসবে না, কিন্তু টিকা এসেছে। এরপরে তারা বললো ভ্যাকসিন আগে প্রধানমন্ত্রী নিক, তারপর অন্যরা নেবে। এসব বলে তারা দেশের মানুষের ভেতর করোনা টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছিল।

হানিফ আরো বলেন, নিজের শরীরে টিকা গ্রহণ করে এটা প্রমাণ করেছি যে, বিএনপি টিকা নিয়ে অবাহতভাবে মিথ্যাচারে লিপ্ত আছে। ভ্যাকসিন নেয়ার পরে আমার মধ্যে কোনো ধরনের অসুস্থতা নেই। ২০ মিনিট পরেও স্বাভাবিকভাবে কথা বলছি। ভারত থেকে আসা করোনা টিকাকে কেন্দ্র করে বিএনপি জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির যে প্রয়াস চালিয়েছে তা সফল হয়নি। জনগণকে রেজিস্ট্রেশন করে নির্ভয়ে করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার অাহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ থেকে করোনাকে চিরতরে নির্মূল করতে সক্ষম হবো। এখানে ভয়ভীতি বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

এ সময় কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোটেক অনুপ কুমার নন্দী, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মুসা কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন রাজু করোনার টিকা নেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ নিজ জেলায় টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করার পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পর্যায়ক্রমে সরকারের বিনামূল্যে দেয়া করোনা ভাইরাসের এই টিকা সেবা গ্রহণ করেন। রোববার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী দিনে কুষ্টিয়ায় নিবন্ধন করা প্রায় ১০০ জনের করোনা টিকা দেয়া হয়। জেনারেল হাসপাতালের চারটি বুথে এই টিকা দেয়া হয়। এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার মানুষ টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এজাজ আহমেদ মামুন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার।

অন্যদিকে একই দিনে (রোববার) কুষ্টিয়ার অন্যান্য উপজেলায়ও টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনগণের ভয়ের সংশয় দূর করতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন নিজেই প্রথমে টিকা নেন। তার টিকা নেয়ার মধ্য দিয়ে এ উপজেলায় টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এজাজ আহমেদ, মামুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার, দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহাদাৎ হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত থাকলেও তারা কেউই টিকা নেননি বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়। এ উপজেলায় উদ্বোধনী দিনে ১৭ জন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সস্পূর্ণ বিনা খরচের করোনা টিকা নেন।

দৌলতপুর উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন রোববার সন্ধায় জানান, এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় ১৩৭ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। তাদের মধ্যে প্রথমদিনে ১৭ জন টিকা নিয়েছেন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং ওসিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উদ্বোধনী দিনে টিকা নেননি কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তুহিন বলেন, ওনাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন না হওয়ার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ওনারা টিকা নিতে পারেননি। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাই যদি রেজিস্ট্রেশনে পিছিয়ে থাকেন তাহলে সাধারণ মানুষের বেলায় কী হবে- এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন।