ঘোড়াঘাট থানার ওসির হস্তক্ষেপে উদ্ধার হলো মানসিক ভারসাম্যহীন নারী

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাহফুজা বেগম (১৮) এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন। ১ নভেম্বর রবিবার বিকেল উপজেলার নূনদহ ঘাট থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত নারী পার্শ্ববর্তী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার খালাশপীর বাঁশপুকুরিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে।

ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন জনান, গত রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় জনৈক ব্যক্তি আমার সরকারি মোবাইলে ফোন করে জানান একটা মেয়েকে ৩ টি ছেলে নারায়নপুরের দিকে একটা মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছে, মেয়েটা অনেকটা অসুস্থ মনে হচ্ছে।এ ঘটনার সংবাদটি পাওয়ার সাথে সাথে দ্রুত সাব ইন্সপেক্টর মোঃ জিয়াউর রহমানসহ অফিসার ফোর্স নিয়ে রওনা হয়ে মেয়েটিকে কোন প্রকার অনাকাংখিত ঘটনা ছাড়াই উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।

মেয়েটার সাথে কথা বললে সে একেক বার একেক কথা বলে। বেশ কয়েকবার কথা বলার পর মনে হল মেয়েটার বাড়ি পীরগঞ্জ থানায়। সঙ্গে সঙ্গে ওসি পীরগঞ্জ থানা রংপুর এর সাথে কথা বলে মেয়েটির ছবি পাঠিয়ে দেয়। বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে মেয়টির পরিচয় নিশ্চিত হবার চেষ্টা করি। অনেক চেষ্টার পর জানতে পারি মেয়ের বাড়ি পীরগঞ্জ থানার খালাশপীর পত্নীচড়া গ্রামে। মেয়ের মা ও পালিত বাবার সাথে যোগাযোগ করা হয়। তার মা মোছাঃ রেজিনা বেগম, পালিত বাবা মোস্তাফিজুর রহমান। মেয়ে গত ৩ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে এসেছে। তারা ঘোড়াঘাট থানার রানীগঞ্জ পর্যন্ত মেয়ের সন্ধান করেছে।

জনৈক মেম্বার মেয়ের মাকে জানিয়েছে থানায় মেয়ের খোঁজ নিতে গেলে থানায় টাকা দিতে হবে। মেম্বারকে টাকা দিলে সে তাদেরকে থানায় নিয়ে যাবে। টাকা কোথায় পাবে তার চেয়ে মেয়ের সন্ধানই বাদ যাক। পীরগঞ্জের এক ব্যক্তি মেয়ের মায়ের পরিচয় নিশ্চিত করে। মেয়ের মা ও পালিত বাবার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা থানায় আসতে চায়না টাকা নাই। মেয়ের মাকে নিশ্চিত করা হল।

আপনারা একটা অটো ভাড়া নিয়ে আসেন ভাড়া আমরা দিব। সে মোতাবেক অটো ভাড়া করে তার মা মোছাঃ রেজিনা বেগম, পালিত পিতা মোস্তাফিজুর রহমান থানায় আসলে তাদের মেয়েকে বুঝিয়ে দেয়া হয় সাথে যাতায়াতের ভাড়া ও খাবারের টাকা দেয়া হয়।

মেয়ের মা জানান, তার মেয়ের নাম মাহফুজা বেগম, বয়স ১৮ বছর। এই বয়সে মেয়েটার ৩টি বিয়ে হয়েছে। ১ম স্বামী খালাশপীরের জসিম উদ্দিন, ২য় স্বামী মাদার গঞ্জের কাকর ও ৩য় স্বামী আজিজর রহমান। ৩টি বিয়ের মধ্যে মাহফুজা নিজে একটা বিয়ে করেছেন। সংসার হয়নি, বাকি ২টা বিয়ে তার বাবা মা দেয়। স্বামীর বাড়িতে থাকেনা, তাই সংসার হয়নি।এখন মনে স্বস্থি বোধ করছি। সংবাদটি পেতে একটু দেরি হলে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটে যেতে পারত।

ওসি মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পেরে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন। আসে পাশে কোন অসংগতি ঘটনা দেখলে থানায়, প্রয়োজনে ৯৯৯ ফোন করে খবরে দিতে বলেছেন। পুলিশ বাঘ ভাল্লু নয়, পুলিশও মানুষ,পুলিশ সব মানুষের নিরাপত্তা ও সেবায় নিয়োজিত। টাউট, বাটপার ও প্রতারকের পাল্লায় পড়বেন না। নিজে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন করুন। থানায় পুলিশী সেবা পেতে কোন টাকা পয়সা লাগেনা।