ইবির জিয়া পরিষদ থেকে ১৭ জন শিক্ষকের পদত্যাগ

পদত্যাগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা জিয়া পরিষদের প্রতি অনাস্থা ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে সতেরো জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরী থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম বাদ দেয়ারমত গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব প্রফেসর ড. এমতাজ হোসেনের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরি সভাপতি থাকাকালীন শিক্ষক সমিতি কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরী থেকে প্রথম শহীদ জিয়াউর রহমানের নাম বাদ দেওয়া হয়। ফলে এর পর থেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটিকে রেফারেন্স হিসেবে নিয়ে পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে প্রতিষ্ঠাতার নাম বাদ দিয়ে ডায়েরী প্রকাশ করে আসছেন।

এক্ষেত্রে জিয়া পরিষদ কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ১৯৭৯ সালে ২২ নভেম্বর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরীতে প্রতিষ্ঠাতার নাম সংযোজন করে ডায়েরী প্রকাশিত হতো। কিন্তু ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রশাসন ডায়েরী থেকে নামটি বাদ দেওয়ায় চরম আন্দোলনের মুখে পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠাতার নাম সংযোজন করে ডায়েরী প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সে অনুযায়ী নিয়মিত ডায়েরী প্রকাশ করা হয়। তবে বর্তমান জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব এমতাজ হোসেনের কারণে ডায়েরী থেকে শহীদ জিয়াউর রহমানরে নাম উঠে গেছে বলে দাবী পদত্যাগকারীদের।

এসব কারন দেখিয়ে জিয়া পরিষদ থেকে পদত্যাগকারীরা হলেন, লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, প্রফেসর মোহাম্মদ সেলিম, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জুলফিকার হোসেন, প্রফেসর ড. মুন্সী মর্তুজা আলী, প্রফেসর ড.বেগম রোকসানা মিলি, সহযোগী অধ্যাপক ড. এস. এম. শফিকুল আলম। ব্যাবস্থাপনা বিভাগের প্রফেসর ড. এ. এস. এম. শরফরাজ নেওয়াজ, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: আতিকুর রহমান।

প্রফেসর ড.কাজী মোস্তফা আরীফ (অর্থনীতি বিভাগ), প্রফেসর ড.এম. এম. শরিফুল বারী (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ), প্রফেসর ড. মো: মিনহাজ উল হক (ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগ), প্রফেসর ড.আবুল হুসাইন মো: নুরুল ইসলাম (আল- হাদীস এন্ড ইসলামিক ষ্টাডিজ বিভাগ), প্রফেসর ড. মো: মনজুর রহমান (বাংলা বিভাগ), সহযোগী অধ্যাপক ড. আ.ও.ম. আছাদুজ্জামান (কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), সহযোগী অধ্যাপক জনাব মোহাম্মদ আনোয়ারুল ওহাব (আল-ফিকহ এন্ড লিগাল ষ্টাডিজ বিভাগ), দিলসাদ সুরমা, সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ।

বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন যাবত জিয়া পরিষদ ইবি, কুষ্টিয়া শাখা চরম অনিয়ম, অগণতান্ত্রিক চর্চা, স্বেচ্ছাচারিতা এবং কতিপয় ব্যক্তির স্বার্থে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, যা জিয়া পরিষদের আদর্শ ও উদ্দেশ্যের পুরোপুরি বিপরীত। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ায় এ সংগঠনটির বাস্তবিক পক্ষে দৃশ্যত কার্যকর কোন ভূমিকা নেই।

এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম বাদ দেয়া হলে জিয়া পরিষদ কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। একইসাথে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী পালনের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে জিয়া পরিষদ নূন্যতম কোন কর্মসূচি গ্রহণের উদ্যোগ নেয়নি বর্তমান পরিষদ। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার প্রতিবাদ করার ক্ষেত্রে কার্যকর কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

এবিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, জিয়া পরিষদকে কতিপয় ব্যাক্তি স্বাথে ব্যাবহার করার জন্য আমরা অনাস্থা জ্ঞাপন করে পদত্যাগ করেছি।

এবিষয়ে ইবি শাখা জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসাইন বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, তারা নিজেরাও জানে। বর্তমান সরকারের যে দমন নিপিড়ন চলছে বিরোধী দলের ওপর। সেখান থেকে নিজেদের বাচাতে তারা মূলত একটা জিয়ার নাম যুক্ত সংগঠন থেকে বাইরে নির্দলীয় একটা প্লোটর্ফমে যাচ্ছে। যেহুতু যাচ্ছে সেহুতু একটা যুক্তি দার করার জন্য তারা যাচ্ছে।

১১ অক্টোবার, ২০২০ at ২২:০০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আএন/ইইই