ঝিনাইদহে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঝিনাইদহ জেলা শাখার উদ্যোগে মুহঃ আব্দুল মমিন এর সভাপতিত্বে শিক্ষক সমিতির অস্থায়ী কার্যালয়ে সোমবার সকাল ১১ টায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস-এর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ মহি উদ্দীন, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটি ও সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঝিনাইদহ জেলা শাখা।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শাহানাজ পারভীন, আলমগীর হোসেন, আলী আকবার, আব্দুল গণি শেখ, খলিলুর রহমান, রেজাউল করীম, মিজানুর রহমান, আলী কদর, প্রমুখ নেত্রীবৃন্দ। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, মহান শিক্ষক দিবস। বিশ্বে প্রায় ১০০ টি দেশে শিক্ষক দিবস পালিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশে সরকারীভাবে এই দিবসটি পালিত হয় না।

বাংলাদেশের শিক্ষকদের নানা সমস্যা থাকা সত্ত্বেও জ্ঞান বিতরণের মহান কাজে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছে বেতন বৈষম্য, নেই যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন কাঠামো সে কারণে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে চায় না। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে শিক্ষকদের উচ্চতর স্বতন্ত্র বেতন প্রদান করা হয়। শ্রীলঙ্কায় শিক্ষকদের মন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের শিক্ষকদের মর্যাদার কোন মানদন্ড নেই।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪০ বছর পর ২০১০ খ্রীঃ এ বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণীত হয়। কথা ছিলো ২০১৮ খ্রিঃ-এর মধ্যে এর বাস্তবায়ন হবে। শিক্ষকদের যথাযোগ্য মর্যাদা ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রদান করা হবে। তাছাড়া বৈষম্যহীন আধুনিক বিশ্ব মানের শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয় শিক্ষানীতিতে।

কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন দেশের শতকরা ৯৭% বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক আজও অবহেলিত। সবচেয়ে বেশী হীনমন্যতায় ভোগেন বেসরকারি শিক্ষকরা। তারা রাষ্ট্র ব্যবস্থার মর্যাদার কোন পর্যায়ে পড়েন না। শিক্ষা খাতে বাজেট অপর্যাপ্ত। সে কারণে শিক্ষকদের মর্যাদা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সর্বত্র চরম বৈষম্য বিরাজ করছে। বিধায় শিক্ষা ব্যবস্থায় সব ধরনের বৈষম্য নিরসন করতে হবে।

শিক্ষকতা পেশা আকর্ষণীয় করতে হবে। যাতে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেন। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা ছিল পরবর্তীতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা জাতীয়করণ করা। দুঃখের বিষয় জাতির ভাগ্য আকাশে কালো মেঘ নেমে আসে বঙ্গবন্ধুর অকাল মৃত্যুতে। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন চায়।

পরিশেষে, শিক্ষক দিবসে আমরা আশা বাদী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে ৫% ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতা দিয়েছেন একই ভাবে মুজিববর্ষে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণের ঘোষণা দিবেন। এটাই শিক্ষকদের প্রত্যাশা।

০৫ অক্টোবার, ২০২০ at ১৮:১৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/কেজেএল/এমএএস