আল মামুন ও উমেদার সোহাগের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিত অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জালাল মোল্লা নামের এক মুক্তিযোদ্ধার কাছে এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ারের সহযোগীর ঘুষ চাওয়ার প্রতিবাদে তাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জামাল মোল্লা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাগলপুরের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জামাল মোল্লা ‘এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা অনুসারে চাষাবাদের জন্য তার জমির পাশে একটি অনাবাদি ও অকৃষি জমির বন্দোবস্ত চান। র্দীঘ ৬ মাসেরও অধিক সময় ধরে ওই আবেদনটি সোনারগাঁ ভূমি অফিসে (এসিল্যান্ড) পড়ে থাকে। সম্প্রতি এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে সোনারগাঁ এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ারের সহযোগী হিসেবে উমেদার মোঃ সোহাগ কাজ করিয়ে দেয়ার কথা বলে তার কাছে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সোনারগাঁ এসিল্যান্ড অফিসে গিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে এসিল্যান্ড আল মামুন আমাকে অপমান করে অফিস থেকে বের করে দেন। পরে খবর নিয়ে দেখা যায়, সার্ভেয়ার বন্দোবস্ত চাওয়া জমি সরেজমিনে দুইবার পরিদর্শন করে পক্ষে মতামত দিলেও উম্মেদার সোহাগ এবং এসিল্যান্ড আল মামুন উভয়ের যোগশাজসে ঘুষ নেয়ার জন্য তাকে হয়রানি করে আসছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জামাল মোল্লা জানান, এসিল্যান্ড অফিসের নিয়োগ করা কোন কর্মচারী না হয়েও দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে এভাবে ফাইল আটকে হয়রানির মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ আদায় করে আসছে। বছরের পর বছর ধরে এভাবে ঘুষ আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন দুর্নীতিবাজ এই কর্মচারী।

সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আল মামুন জানান, মুক্তিযোদ্ধা জালাল মোল্লা আমার কাছে নাল জমিকে ডোবা হিসেবে বন্দোবস্ত চেয়েছে। আমি নাল জমিকে ডোবা হিসেবে বন্দোবস্ত না দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

অপরদিকে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারী উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের কাঁচপুর ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় কেন্দ্র পরিদর্শনে যান সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু ওমর। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে তার সথে অশোভনীয় আচরণ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ দিয়ে বের করে দেন।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম ও উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার মোঃ রকিবুর রহমান খাঁনের কাছে বিষয়টির মিমাংসা চান ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু ওমর। এরপর বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও ইউএনও মোঃ রকিবুর রহমান খাঁন কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম উপজেলা পরিষদের সভা দু’দফায় বয়কট করেন।

এ ব্যাপারে ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু ওমর জানান, কাঁচপুর ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আবু বকর সিদ্দিকের অনুরোধে কেন্দ্র পরিদর্শনে যাই। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে কেন্দ্র সচিবের সঙ্গে দেখা করে জানতে পারি এসিল্যান্ড কেন্দ্রে উপস্থিত আছেন। এসিল্যান্ডকে পরিচয় দিয়ে কুশল বিনিময়কালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কেন্দ্র থেকে আমাকে বের হয়ে যেতে বলেন।

একপর্যায়ে সরি বলে বের হয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ডেকে আমাকে অপমান করে বের করে দেন। এর আগেও এই এসিল্যান্ড আল মামুন আরো এক চেয়ারম্যানকে অপমান করেছেন। তা এমন অসদ্বাচরন নিয়ে সকল জনপ্রতিনিধির মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।