দৌলতপুরে টিসিবির অনিয়ম চলছেই, তদন্তের নির্দেশ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবির পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম অব্যবস্থাপনা চলছেই। থামানো যাচ্ছে না কিছুতেই। বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও নিম্নআয়ের ভোক্তাদের সাধ্যের দামে পণ্য পৌঁছে দিতে দেশে কাজ করছে সরকারের এই বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান। সরকার নিযুক্ত ডিলারদের মাধ্যমে বিশেষ নিয়মের মধ্য দিয়ে টিসিবির পণ্য পৌঁছায় ভোক্তাদের কাছে। কিন্তু দৌলতপুর উপজেলায় এর উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। এখানে এই পণ্য বিক্রির প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, দুর্নীতির কথা টেনে অবৈধ বাণিজ্যের খবর বারবার প্রকাশ হলেও এখনো তা বন্ধ হয়নি। আগের মতোই সিন্ডিকেটে বন্দী হয়ে রয়েছে এখানকার টিসিবি।

দুই মাসেরও বেশি সময় আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্য প্রমাণসহ খবর আসে দৌলতপুর উপজেলার টিসিবি ডিলার গোলাম মোস্তফা ওরফে নাড়ু হাজির এই অবৈধ বাণিজ্যের বিষয় নিয়ে। বলা হয়, বিভিন্ন দোকান ও খাবারের হোটেলে ডিলার গোলাম মোস্তফা নাড়ু টিসিবির নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে তেল, ডাল, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়মিত বিক্রি করছেন।

যদিও এসব পণ্য বিক্রি করতে পারে কেবলমাত্র নির্ধারিত ডিলার ও সাব-ডিলাররা। তবে অবশ্যই তা হতে হবে সরকার নির্ধারিত মূল্যে, লাল ব্যানার টানিয়ে এবং ভোক্তাদের মাথাপিছু নির্দিষ্ট পরিমাণে। কিন্তু নিয়মের কোনোটাই তোয়াক্কা না করে নির্বিঘ্নে এই সরকারি পণ্যে অবৈধ বাণিজ্য করে আসছেন এ উপজেলার ডিলার, সাব-ডিলার ও দোকানদারদের সিন্ডিকেট।

প্রকাশিত খবরের অভিযোগকে অস্বীকার করেননি খোদ অভিযুক্ত ডিলারও। নগদ টাকার ক্রেতা, হোটেল মালিক ও মুদি দোকানিরা গণমাধ্যমকে জানান, কোনো রকমের বাধাবিঘ্ন ছাড়াই একইভাবে নিয়মিত টিসিবির মালামাল ক্রয় করে আসছেন তারা।

অনিয়ম করে টিসিবি পণ্যের অবৈধ বিক্রির সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ খবর বের হওয়ায় গেল মার্চে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার কথা জানায় দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে দেরিতে হলেও খবরগুলোর প্রেক্ষিতে দাপ্তরিকভাবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম আজমকে তদন্ত পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রোববার (৩১ মে) এই নির্দেশ দেয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার জানান, করোনা পরিস্থিতিতে নানান ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি নজর দেয়া সম্ভব হয়নি। খুব শিগগিরই বিষয়টির তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়বে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে চলমান অসঙ্গতির সুষ্ঠু তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ সাপেক্ষে সরকারের ন্যায্যমূল্যের এই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সত্যিকার অর্থেই বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগী উপজেলাবাসী।