রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুই দফায় মুক্তি পেল ৯৮ বন্দী

করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুই দফায় মুক্তি পাচ্ছেন ৯৮ জন কয়েদী। সরকারের সাধারণ ক্ষমায় এর মধ্যে প্রথম দফায় ৩৩ জন ও দ্বিতীয় দফায় ৬৫ জন। তবে কেবল সরকার নির্ধারিত শর্ত পূরণ করা কয়েদীদেরই মুক্তি দেয়া হয়েছে। পরবর্তী তৃতীয় ধাপে আরো কিছু কয়েদীদের মুক্তি দেয়া হতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
কারা সূত্রের দেয়া তথ্য মতে, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েদী ধারণ ক্ষমতা ১ হাজার ৪৬০ জন। অথচ এই কারাগারে বর্তমানে কয়েদীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন। যা ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি।

আরো পড়ুন :
কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটার উদ্বোধন করলেন এমপি শিখর
যশোরে ত্রাণ বিতরণ করলেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬৮৮

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন জানান, সরকারের নির্ধারিত শর্তের মধ্যে যে সকল কয়েদী পড়বে, কেবলমাত্র তারাই এই মুক্তি পাবে। এর জন্য কারা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কয়েদীদের নামের আলাদা কোন তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বা সরকারের কাছে পাঠানো হয়নি।
সরকারের শর্ত অনুসারে প্রথম ধাপে ৩৩ ও দ্বিতীয় ধাপে ৬৫ জনসহ মোট ৯৮ জন কয়েদীকে রাজশাহীর কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে গত শনিবার ও রবিবার ৩৮ জন কয়েদীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বাকি ৬০ জন কয়েদীদের জরিমানার অর্থ আদায় বকেয়াসহ সরকারের দেয়া শর্ত পুরণ না হওয়ায় তাদের মুক্তি দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে শর্ত পুরণের মাধ্যমে শিঘ্রই তাদের মুক্তি দেয়া হবে। এছাড়া তৃতীয় ধাপে আরো কয়েদী মুক্তি পেতে পারেন।

সিনিয়র জেল সুপার আরো জানান, কয়েদীদের পরিবারের সদস্যদের ফোন করে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এ ধরণের মুহূর্তে প্রতারকদের অন্য বন্দীদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা চাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বন্দীর স্বজনদের সতর্ক থাকতে হবে। কেউ টাকা চাইলেই তারা যেন না দিয়ে দেন। কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই যেন তারা ব্যাংকে টাকা পরিশোধ করেন।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের অন্যান্যা আদালতের মতো রাজশাহীর আদালতগুলোও বন্ধ রয়েছে। এতে করে আসামীদের জামিন বন্ধ রয়েছে। তবে প্রতিদিনই বিভিন্ন থানা থেকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীসহ বিভিন্ন অপরাধে আসামীদের ধরে কারাগারে প্রেরণ থেমে নেই। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিষয়টি উদ্বেগজন। অবশ্য করা কর্তৃপক্ষ নিজস্ব দুই জন চিকিৎসকের মাধ্যমে কয়েদীদের স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করছেন।

কারা সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্য মতে, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কারাগারগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে বাংলাদেশের সবকটি কারাগার থেকে তিন ধাপে মোট ২ হাজার ৮৮৪ জন কয়েদীকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেয়া হবে। তবে সরকারের দেয়া নির্দিষ্ট শর্তের মধ্যে যে সকল কয়েদী পড়বে, কেবল তারাই মুক্তি পাবে।

সরকারের দেয়া শর্তের মধ্যে রয়েছে, যে কোন অপরাধে আদালতের মাধ্যমে এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী হতে হবে। একই সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েদীর সাজা খাটার মেয়াদ অন্তত ৬ মাস পার হয়েছে এবং জরিমানা থাকলে তা পরিশোধ হয়েছে। এমন কয়েদীরাই সরকারের ক্ষমার মধ্যে পড়বেন ও মুক্তি পাবেন বলে জানা গেছে।

মে ০৪, ২০২০ at ১৬:৫৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআর/এএডি