করোনার উপসর্গ থাকায় চিকিৎসা মেলেনি, ইবি ছাত্রীর আবেগঘন স্টাটাস

করোনার উপসর্গ তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। শ্বাসকষ্টের রোগী শুনে তার চিকিৎসা দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বরং অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দিয়েছে। মারাত্বক অসুস্থ হওয়ার পরেও কোনো প্রাথমিক চিকিৎসা মেলেনি ভুক্তভোগির।

এমন ঘটনার শিকার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ও খুলনার রুপসা থানার বাসিন্দা সাবিকুন্নাহার মিতা। গত বুধবার বিকেলে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে তার সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন যাবত তীব্র শ্বাসকষ্ট, কাশি, গলা ব্যাথা এবং হালকা জ্বরে ভুগছেন ওই ছাত্রী। যা বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঘন্টাখানেক হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে ছুটে বেড়ালেও চিকিৎসা পাননি। পরে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় এক ডাক্তারের চিকিৎসা নেয় ওই ছাত্রী।

গতকাল রাত ১১ টা ৫১ মিনিটে হাসপাতালের ভোগিন্তির কথা জানিয়ে ফেসবুকে নিজ টাইমলাইনে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন ওই ছাত্রী। যা এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘আমার বাংলাদেশ-

গত ৩ দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছি। আজ আর না পেরে খুলনা মেডিকেলে গিয়েছিলাম, কিন্তু কপাল খারাপ। যখন শুনলো শ্বাসকষ্ট, তখন বলে তারা রোগী দেখে না। আমি উত্তরে বললাম তাহলে আমাদের মত লোক কোথায় যাবে?? উত্তর আসলো ৩/৪টা
১. প্রাইভেট ক্লিনিক এ যান।
২. সদর হাসপাতালে যেতে পারেন। আমরা সরি।
৩ নম্বর টা ছিলো মজার উত্তর… ঠিক তখন ৪ জন পুলিশ ২জন মধ্যবয়সী লোক নিয়ে আসে। জরুরি বিভাগ থেকে ৩ নং উত্তর আসে ঠিক এভাবে, ‘আমরা এই সব রোগী যায় হোক দেখবো, কিন্তু আপনাকে না।’

আমি..
তাদের ২ নং কথার উত্তর হিসেবে বলছি, ‘আপনারাই যদি রোগী না দেখেন, সদরের ওরা কিভাবে কি করবে।’ ওরা চুপ।

আমি বললাম কোন ডাক্তার নাই আমাকে দেখার মত। আমি তো দম নিতে পারছি না। তারা বলে আজ হবে না কাল আসেন। তখন আমি বললাম আমার অবস্থা খারাপ হচ্ছে, তারা বলে সারা দিন কি করছেন?

আমিঃ আর সহ্য করতে না পেরে এখন (৪ঃ৩০) আসলাম।
তারা তখনও বলে হবে না।

আর আমার আপনার প্রশাসনের পুলিশ ভাইয়ারা তখনও দেখল পুরোটা, কিন্তু কোন রেসপন্স নাই। ওখান থেকে চলে আসি আর গ্রাম্য ডাক্তার দেখাই, এখন একটু কম কষ্ট হচ্ছে।

আজকের প্রশাসন তাদের চেতনা নিয়ে জেগেও ঘুম ছিলো। বাহ বাহ..। বড় লেকচার ছাড়েন অথচ আপনারা রোগী দেখেননা আর শ্বাসকষ্টে কেউ মারা গেলে করোনা সন্দেহ তাই না? শেষে জানাজা মিলে না। আমার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ বাংলাদেশ।’