রসুনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে হাসি

দেশের যেসব স্থানে রসুন আবাদ বেশি হয় তার মধ্যে অন্যতম যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রাম। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং গত কয়েক বছর ধরে ভালো দাম পাওয়ায় এটি বাণিজ্যিক ভাবে আবাদ করছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগও এবার রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামে রসুনের বাম্পার ফলনের আশা করছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌমুমে রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামে প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। আকস্মিক কোনও দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ। রাজগঞ্জের যেসব স্থানে রসুনের আবাদ বেশি হয় তার মধ্যে খালিয়া, হানুয়ার, ঝাঁপা, চালুয়াহাটি গ্রাম অন্যতম।

খালিয়া গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতি একর জমিতে রসুন চাষে শ্রমিক ও চাষ বাবদ খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। আর বীজ, রাসায়নিক সার ও সেচ বাবদ খরচ হয় আরও ৩০ হাজার টাকা। এতে করে প্রতি একরে খরচ হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে একর প্রতি ৫৫ থেকে ৬০ মণ রসুন পাওয়া যায়। গড়ে প্রতি মণ রসুন আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা করে হলে দাম পাওয়া যায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকার মতো। রসুন ঘরে তোলা, বাছাই ও বাজারজাতকরণে আরও প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ বাদ দিলেও লাভ থাকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তবে এই দামে রসুন বিক্রি করতে হলে মৌসুমের শুরুতেই নয়, একটু অপেক্ষা করতে হয়। কৃষকরা আরো জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন রসুন চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে। এ বছর রসুনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
আরও পড়ুন: ‘রুট সিলেকশন’ পর্যায়ে রাজশাহী-কলকাতা রেল যোগাযোগ

রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম ও সিরাজুল জানান, এবারে রসুনের ভাল দাম পেয়েছেন কৃষকরা। তাই অধিক লাভের আশায় এবারও তারা এটি চাষের প্রতি ঝুঁকছেন। তাছাড়া এবার আবহাওয়া ভালো রয়েছে। প্রাকৃতিক কোনও দুর্যোগ না হলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা যায়।খালিয়া গ্রামের কৃষক আবু হানিফা, জুলফিকার আলী জানান, প্রথম দিকে ভালো দাম না থাকলেও পরে এসে দাম পেয়েছেন।

আবাদের  মৌসুমে এবার রসুন বীজের অঙ্কুরোদগমও ভালো হয়েছে। গত বছর রসুন বিক্রি করে লাভজনক দাম পেয়েছি। কৃষক সফিকুল ইসলাম জানান, রসুন আবাদে তেমন ঝাঁমেলা পোহাতে হয় না। সামান্য সেচ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সার ও কীটনাশক দিলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। ইউনিয়ন ভিত্তিক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে সেখানকার কৃষকদের কাছে রসুন প্রধান অর্থকরী ফসল। তাই দিন দিন তারা এর আবাদে ঝুকছেন। কৃষকরা যেন কোনও ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হয় সেজন্য কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, ভালো ফলন হওয়ায় রসুনের ব্যাপক আবাদ হয়। এবার আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। এটি বজায় থাকলে রসুনের বাম্পার ফলন হবে। তখন নিজ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব হবে।

দেশদর্পণ/বিএইচ/এসজে