যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে কমিউনিটি আই কেয়ারের বেইজ সেন্টার চালু

ছবি- সংগৃহীত।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কমিউনিটি আই কেয়ারের বেইজ সেন্টার চালু হয়েছে। এখান থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চোখের উন্নত চিকিৎসাসেবা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারছেন খুলনা বিভাগের ৫ জেলার ১২ উপজেলার মানুষ। গত ১০ দিনে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন ৮৪৪ রোগী। এটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির আওতায় ন্যাশনাল আই কেয়ারের অপারেশনাল প্লানের একটি কার্যক্রম উপজেলা কমিউনিটি আই সেন্টার।

আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট থেকে সরকারি এই হাসপাতালে কমিউনিটি আই কেয়ারের বেইজ সেন্টারের কার্যক্রম শুরু হয়। ৪ চিকিৎসক সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। তারা হলেন চক্ষু বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. হিমাদ্রী শেখর, মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান, ডা. তাজুল ইসলাম ও ডা. সুস্মিতা বিশ্বাস। এখান থেকে যশোর জেলার শার্শা উপজেলা, ঝিকরগাছা উপজেলা, কেশবপুর উপজেলা, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলা, কালীগঞ্জ উপজেলা, কোটচাঁদপুর উপজেলা, মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা, মুজিবনগর উপজেলা, মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলা, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা, তালা উপজেলা ও খুূলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মানুষ এখান থেকে প্রযুক্তির মাধ্যমে চোখের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিতে পারছেন।

আরো পড়ুন :

> ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৬১
> ২৫০ কোটির পাঠানের পর ৩০০ কোটির জাওয়ান

হাসপাতালের বেইজ সেন্টারে দায়িত্বরত আইটি প্রকৌশলী জনি হোসেন জানান, উল্লিখিত ১২ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি আই সেন্টারের জন্য একটি নির্দিষ্ট কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে ২ জন করে ট্রেনিংপ্রাপ্ত সেবিকা দায়িত্ব পালন করেন। ওই কক্ষে চোখের রোগীরা গিয়ে সেবিকাদের সাহায্যে প্রথমে চিকিৎসার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করবেন। এরপর সেবিকা রোগীর অটোরিক্সাক্টোমিটার (চোখের পাওয়ার মাপার যন্ত্র) দিয়ে চোখের পরীক্ষা করেন। সেখান থেকে রোগীরা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বেইজ সেন্টারে দায়িত্বরত টেলি-কনসালটেন্টের কাছ থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। আইটি প্রকৌশলী জনি হোসেন আরও জানান, ৮ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেইজ সেন্টার থেকে ৮৪৪ রোগী অনলাইনে চোখের চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে পুরুষ রোগী ৩২৬ ও মহিলা রোগী রয়েছেন ৫১৮ জন। বিনামূল্যে ওষুধ পেয়েছেন ৭১৫ রোগী। এছাড়া ৫২৯ রোগীকে চশমা দেয়া হয়েছে। বেইজ সেন্টারের ইনচার্জ জ্যেষ্ঠ সেবিকা সেলিনা আক্তার জানান, বেইজ সেন্টারে রোগীদের চোখের চোখের চিকিৎসায় তিনটি উন্নতমানের মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। সেগুলো হলো ওসিটি মেশিন, সিএফপি মেশিন ও রেটিনা লেজার মেশিন। তিনিসহ আরেক জ্যেষ্ঠ সেবিকা যোগমায়া রানী বিশ্বাস রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতীম চক্রবর্ত্তী জানান, কমিউনিটি আই কেয়ার সেন্টার চালু করা হলো সরকারের অন্যতম প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রামের মানুষ খুব সহজেই চোখের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারছেন। চোখের সমস্যা নিয়ে সরল মানুষগুলোকে জেলা শহরে ছুটতে হচ্ছে না।

চক্ষু বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. হিমাদ্রী শেখর জানান, অনেক মানুষ আছেন, যারা চোখে দেখতে পেতেন না।

তারা কোথায় যাবেন, কোথায় চিকিৎসা নেবেন তাও জানতেন না, কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই, শেখ হাসিনার সরকার এসব মানুষের কষ্ট লাঘবে কমিউনিটি আই সেন্টার চালু করেছেন। চক্ষু বিষয়ে প্রশিক্ষিত সিনিয়র স্টাফ নার্সদের সহায়তায় ইন্টারনেট ও অত্যাধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে চোখের সমস্যা নিয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিতে পারছেন। এটা আমাদের জন্য বিরাট একটি পাওয়া।

আগস্ট ১৭, ২০২৩ at ১১:৫০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর