বেনাপোল পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র নাসিরের দিকে হৃদয় নিঙরানো চাহনিতে “কে এই বজলুর রহমান” ?

(ছবিতে কথা বলে। ঠিক. বাবা-সন্তানের ভালবাসার এক অপরুপ হৃদয় নিঙরানো চাহনি)।

১৭-জুলাই-২০২৩ অনুষ্ঠিত বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার মাঝি নাসির উদ্দিনকে অথৈই মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়ে সফলতা অর্জন করাতে যে মানুষটি অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় পাশে ছিলেন তিনি এই অঞ্চলের কৃতি সন্তান আলহাজ্ব বজলুর রহমান।

তিনি নাসির উদ্দিনের জন্য পিতৃ স্নেহের ভান্ডার উম্মুক্ত করে দিয়ে দিনরাত, সার্বক্ষণিক যশোরের শার্শা আসনের উন্নয়নের রুপকার ও বাস্তবায়নকারি, সকল কাজে সফলতার মহানায়ক, মাননীয় এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের নৌকা বিজয়ের দিক নির্দেশনা, দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য অর্পণকে আমলে নিয়ে নিজেই হকারের মতো পোস্টার, লিফলেটসহ নির্বাচন কাজে ব্যবহৃত সার্বিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিলি করে বেড়িয়েছেন। কখনও গুরু দ্বায়িত্ব পালনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ঠ সকল দপ্তরে নির্বাচনী কর্মী হিসেবে নিজেকে সাবলীলভাবে উপস্থাপণ করেছে।

কোনভাবেই কমতি ছিল না তার নৌকা বিজয়ের স্বপ্নগাঁথার। অসংখ্য দলীয় কাউন্সিলরের সাথে গভীর রাত পর্যন্ত সমন্বয়কের ভূমিকা রাখতে হয়েছে। যাতে নৌকার ভোটে কোন বিভাজন কেউ সৃষ্টি করতে না পারে। অতি অল্প সময়ে অনেক দক্ষতার সাথে তিনি ভোট প্রদানের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত অতন্দ্র প্রহরির ভূমিকা পালন করেছেন। আবার এলাকাবাসীর কাছে ভোট ভিক্ষা করেছেন ভিখারীর ন্যায় নমনীয়ভাবে। যেকারণে বেনাপোলবাসীর কাছে বজলু চেয়ারম্যান এক অনন্যা।

কে এই বজলুর রহমান? তিনি বেনাপোল ইউনিয়নের বড়আঁচড়া গ্রামের সদালাপী, মিষ্ঠভাষী, সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ন ব্যক্তিত্ব মৃত মুক্তার মৌলভীর ছেলে। যিনি এলাকার মানুষকে দ্বীনের শিক্ষাসহ আদর্শবান মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত উৎসর্গ করেছিলেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সকলের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে নিজ দ্বায়িত্ব-কর্তব্য থেকে এলাকায় অতন্দ্র প্রহীর ন্যায় ঘরছাড়া মানুষের গোয়ালের ছাগোল-গরু, গোলার ধানসহ সকল আসবাবপত্র, ফসলাদি পাহারা দিয়েছেন। সুযোগ-সন্ধানী চিহ্নিত লুন্ঠনকারি ডাকাত দলদের বার বার “ঘরছাড়া মানুষের ঘর থেকে” লুট করতে বাঁধা প্রদান করেছিলেন। যেকারণে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে লুটেরা রাজাকারের দল নূরানী চেহারার অধিকারি দ্বীনে আলেম মোক্তার মৌলভীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছিলেন। এখানেই শেষ না-

৫ মে-১৯৯৩ ইংরেজি সাল, বিএনপির শাসনামল, রচিত হয় আরেকটি কাল অধ্যায়।। তৎকালিন ক্ষমতাসীন দলের বে-পরোয়া চাঁদাবাজ, জবরদখলকারি, ভূমিদস্যু, হায়েনার পাল বজলুর রহমানের বড় ভাই সামছুর রহমানকে তাঁর বাড়ির বৈঠকখানায় নির্মমভাবে বোমা নিক্ষেপ ও গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। যিনি তার জীবদ্দশায় অসহায় নির্যাতিত নীপিড়ীত মানুষের পাশে থেকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সেবা করেছেন। তিনি বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের আমৃত্যু সততা, দক্ষতা, সাহসিকতা ও জনগণ পিপাসু জনপ্রিয় মেম্বার ছিলেন। তাঁর বড় ছেলে ১৭ জুলাই-২০২৩ অনুষ্ঠিত বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র মোঃ নাসির উদ্দিন।

২০০৪ সালের ১২ জানুযারি, বিএনপি-জামায়াতের শাসনামল। বজলুর রহমানের জীবনে নেমে আসে আরেকটি অমাবশ্যার অন্ধকার। জীবন ভয়ে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকা এবং ক্ষমতাসীনদের উদাত্ত্ব আহ্বানে তার মেজো ভাই, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের বলিষ্ঠ নেতা, সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতাসহ আজীবন সভাপতি ফজলুর রহমান ফিরে আসেন নিজ বাড়িতে।

অবশেষে তার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আজমিরি ট্রান্সপোর্ট এজেন্সীর সামনে, বর্তমান বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন ভবন গলির মুখে তাকেও বোমা হামলা ও গুলি করে অমানুষিকভাবে হত্যা করে পাষন্ডরা।

একে একে আপনজন হারানোর বেদনা বজলুর রহমানকে দীনে দীনে কুঁরে কুঁরে খেতে থাকে। তথাপিও নিজেকে সামলে নিলেন, দমেননি তিনি। নিজেকে ইস্পাত কঠিন শক্ত, কর্তব্যকাজে পাহাড়ের ন্যায় অটল আর কোমলতায় সাগরের পানির ন্যায় নিজেকে কোমল হৃদয়ের অধিকারি হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করলেন। ধার্মিকতায়র পিছিয়ে থাকেননি। স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি জনগণের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিলেন।

২০১১ সালের বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন এবং জনগণের ভালবাসার উপহারের ফসল বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন।

সে থেকে অদ্যবধি আলহাজ্ব বজলুর রহমান বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বহাল থেকে শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি। বারংবার তিনি ইউনিয়নবাসীর সেবার মানে সফলতা অর্জণ করায় উপজেলার শ্রেষ্ট চেয়ারম্যান, যশোর জেলার শ্রেষ্ট চেয়ারম্যান ও খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ট চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদকে ভূষিত হয়েছেন।

পারিবারিক জীবনে গুরু দ্বায়িত্ব মাথায় নিয়ে সদা মিষ্ট হাসিতে অক্লান্ত পথচলায় তার নিজ ছোট ভাই, সন্তান-পরিজনসহ পিতৃহারা ভাতিজাদের প্রতি নেক-নজর ও দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমরণ যত্নবান ও সংগ্রাম করে চলেছেন তিনি।

তারই ধারাবাহিকতায় বেনাপোল পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র বিএসসি (অনার্স), এমএসসি ফিজিক্স (জাবি) আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার পিপাসা নিবারণকারি সন্তান স্নেহের আপন ভাইয়ের ছেলে।

লেখক: