চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী কে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার গোল্লা মাধবপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুক্তা খানমের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সামনে বেধড়ক মারধরসহ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এতে ঐ শিক্ষার্থীর হাড় ফেঁটে গেছে। প্রভাবশালী একটি মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ুঘটনাটি ঘটেছে গত ২১শে মে রবিবার দুপুর ১টায় বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে।

আহত জিনাত সুলতানা তুবা (১০) গোল্লা মাধবপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্রী । সে গোল্লা গ্রামের মোঃ জালাল হোসেনের মেয়ে।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকার নাম মুক্তা খানম ঐ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন।জানা যায়, গত ২১শে মে রবিবার বিদ্যালয়ে গণিত পরীক্ষা হয় এতে তুবার পরীক্ষা খারাপ হয় তখন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুক্তা খানম ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী তুবাকে বেধড়ক মারধর করে এতে তুবার হাতের হাড় ফেটে যায়।
জিনাত সুলতানা তুবার সহপাঠীরা জানান, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুক্তা খানম ‘ডাস্টার’ দিয়ে ক্লাসের সবার সামনে অমানবিকভাবে মারধর করেছে জিনাত সুলতানা তুবাকে । মারধরের সময় অনেক কান্নাকাটি করেও ম্যাডামের মন পায়নি সে।

বিদ্যালয় সুত্রে জানাযায়, এঘটনায় বিদ্যালয় কর্তপক্ষ ২হাজার টাকা চিকিৎসার জন্য তুবার পরিবারকে দিয়েছে।সরেজমিনে ১লা জুন বৃহস্পতিবার বদলগাছীর গোল্লা মাধবপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ঐ ছাত্রী স্কুলে অনুপস্থিত। ঐ বিষয়টি স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের নিকট জানতে চাইলে তিনারা বলেন, আপনাকে কে পাঠাইছে, কোন অফিসে পাঠিয়েছে বলে তারা বলেন, তেমন কিছুই হয় নি। সে দিন ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষকা অনুপস্থিত ছিলেন।

ঐ স্কুলের আর এক সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম সাংবাদিক আসার বিষয়টি একই গ্রামের ব্যবসায়ী খোরশেদ কে জানান। খোরশেদ সাংবাদিকদের বলেন আমার গ্রামের ব্যপার এটা আমরা সমাধান করবো।

এ সময় ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুক্তা খানম ‘ডাস্টার’ দিয়ে ক্লাসের সবার সামনে অমানবিকভাবে মারধর করেছে জিনাত সুলতানা তুবাকে। মারধরের সময় সে অনেক কান্নাকাটি করেছে তারপরও ম্যাডামের মন পায়নি।

এ ব্যপারে জিনাত সুলতানা তুবার পিতা জালাল হোসেন জানায়, ঐ দিন রাত ৯টার দিকে ঘুমাতে গেলে শরীরের ডান কাদের অংশে ফুলা ও জখম দেখতে পায় তুবার মা ফুলা বিষয়ে তার মেয়ে জিজ্ঞাসা করে কি ভাবে হলো। পরের দিন ২২শে মে সোমবার তুবার পরিবারের লোকজন বিষয়টি অন্য শিক্ষার্থী কর্তৃক মারধরের ঘটনাটি জানতে পায়।

এবং গত ২৭ শে মে আহত ছাত্রী জিনাত সুলতানা (তুবা) কে নওগাঁ ইসলামি ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল নিয়ে যায় ও চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আহত ছাত্রী তুবার পরিবার আরও জানান, উক্ত ছাত্রীকে ডাস্টার দ্বারা এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। তুবার এক্সে রিপোর্টে তার শরীরের ডান হাতের কাঁধের অংশে হাড় ফেটে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, মুক্তা খানমের পরিবারের সাথে জালাল হোসেনের পারিবারিক শক্রতার জের ধরেই জালালের মেয়ে তুবাকে মারধর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফৌরদোসী আক্তার জানান, আমি ঘটনা দেখিনি তবে শুনেছি অন্য শিক্ষার্থীর কাছে। ছাত্রীকে মারধরের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা মুক্তা খানম বলেন, তার ভুল হয়ে গেছে। তিনি এ ঘটনায় অনুতপ্ত।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বদলগাছী সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক মাওলানা মো. আব্দুস সাত্তার জানান, বদলগাছীর সাংবাদিকদের মাথা হাফিজার রহমানের সাথে আমার কথা হয়েছে। এ বিষয়ে আর আমি অন্য কার সাথে কথা বলতে চায় না। তবে এই শিক্ষিকা অসুস্থ সুতরাং এটি মানবিক দৃষ্টি কোণ থেকে দেখা হোক।

বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিয়ার রহমান বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বদলগাছী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম কিছুটা এরিয়ে গিয়ে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা। তবে আমি ঐ স্কুলের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসারকে খোঁজ নিতে বলেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, আমি বিষয়টা জানি না। আমি শিক্ষা অফিসারকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জেনে পদক্ষেপ নিবো।

জুন ০৪, ২০২৩ at ১২:১৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোসারসা/ইর