মাদক মামলা থেকে এক আসামির নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গোলাম মোস্তফা হেলা নামে পুলিশের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ইনসপেক্টর পদমর্যাদার এই পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে গাজীপুরে ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত।
ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ জুন) আদালতে মামলা করেছেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার পুড়াহুদা গ্রামের মৃত এজের আলী বিশ্বাসের ছেলে ইকবল হোসেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী ইকবল হোসেনের অভিযোগ, সদর উপজেলার দোগাছিয়া গ্রামের শামছুউদ্দীন মণ্ডলের ছেলে আসামি পুলিশ ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলা তার আত্মীয় এবং বন্ধুবর। ইকবল হোসেনের শ্যালক সোহরাব হোসেনও পুলিশে চাকরি করেন। বর্তমানে সোহরাব হোসেন ঢাকায় কর্মরত।
আরো পড়ুন :
> রাজাপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বাসে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট
> স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলায় স্ত্রী’র যাবজ্জীবন কারাদন্ড
২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ইকবল হোসেনের ভাগ্নে জুয়েলের নবীনগরের বাসা থেকে একটি প্রাইভেটকারে কর্মস্থলে ফিরছিলেন সোহরাব হোসেন। পথে ২০ মাইল নামক স্থানের চেকপোস্টে পৌঁছালে টহল পুলিশ প্রাইভেটকারটি দাঁড় করায়।
গাড়িটি চালক থামানোর সাথে সাথে ভেতরে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় একজন যাত্রী বের হয়ে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে ওই গাড়ির ভেতর থেকে ১১০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ এবং অন্যদের সাথে সোহরাব হোসেনকেও আটক করে।
এ ঘটনায় ঢাকার আশুলিয়া থানায় মামলা করে পুলিশ। পরে ইকবল হোসেন যোগাযোগ করেন তার বন্ধু পুলিশ ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলার সাথে। তিনি শ্যালক সোহরাব হোসেনের নাম ওই মামলা থেকে বাদ করিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।
এ জন্য ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলা তার কাছে ৭ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর কয়েক দফায় মোট ৭ লাখ টাকা ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলাকে দেন ইকবল হোসেন। কিন্তু পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে ইকবল হোসেন জানতে পারেন, মামলা থেকে সোহরাব হোসেনের নাম বাদ দেওয়া হয়নি।
এ কারণে তিনি ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলার কাছে ৭ লাখ টাকা ফেরত চান। কালক্ষেপণের এক পর্যায়ে একই বছরের ৫ অক্টোবর ইকবল হোসেনের স্ত্রী আমেনা খাতুনের নামে ১ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক দেন ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলা। কিন্তু নগদায়ন করতে গেলে ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফার অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেকটি ডিজঅনার করে।
বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানানোর পর ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলার কাছে টাকা ফেরত চান ইকবল হোসেন। কিন্তু ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলা তাকে নানাভাবে ঘোরাতে থাকেন।
এরপর গত ২৩ এপ্রিল সকালে ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলার বাড়িতে গিয়ে ৭ লাখ টাকা ফেরত চান ইকবল হোসেন। এ সময় ইনসপেক্টর গোলাম মোস্তফা হেলা তাকে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। এ কারণে আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন ইকবল হোসেন।
জুন ০২, ২০২৩ at ১০:১২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর