ঝিকরগাছায় মধ্যরাতে প্রেমিকার বাড়িতে মিলল কলেজছাত্রের লাশ! পুলিশ হেফাজতে অভিযুক্ত তরুণী

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামে প্রেমিকার বাড়িতে মধ্যরাতে দেখা করতে গিয়ে লাশ হয়েছেন ইলিয়াস হোসেন (১৯) নামে এক কলেজছাত্র। তার মৃত্যু ঘিরে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে। অভিযুক্ত তরুণীর পরিবারের দাবি, ইলিয়াস আত্মহত্যা করেছে। তবে সেই দাবি মানতে নারাজ ইলিয়াসের পরিবার। তাদের দাবি, ইলিয়াসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামের আয়নাল হক দফাদারের বাড়ির জানালার পাশ থেকে ইলিয়াসের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ইলিয়াস হোসেন একই গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে ও চৌগাছার পাশাপোল আমজামতলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামের আয়নাল হকের মেয়ে কলেজছাত্রী লুইস পারভীন লিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশি ফারুক  হোসেনের ছেলে ইলিয়াস হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের দুইজনের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকার অনেকেই  জানতেন। শনিবার দিবাগত রাত ২ টা ৩০ মিনিটের দিকে লুইস পারভীন লিয়ার সঙ্গে দেখরাতে যান ইলিয়াস হোসেন। ঘরের জানালা দিয়ে তারা দুজন কথা বলছিলেন। এক পর্যায়ে ইলিয়াস পড়ে যান। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

আরো পড়ুন :
> শিবগঞ্জে দিন মজুরের বাড়িতে হামলা উচ্ছেদের পায়তারা!
> লালমনিরহাটে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী-শাশুড়ি আটক

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তরুণী লুইস পারভীন লিয়ার দাবি, ইলিয়াস রাতে তার সাথে কথা বলতে এসেছিল। তাকে সাফ জানিয়ে দেয় তার সাথে সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়। তাকে বাড়িতে চলে যেতে বলে। এক পর্যায়ে ইলিয়াস জানালা দিয়ে হাত ভিতরে দিয়ে তার ওড়না কেড়ে নেয়। সেই ওড়না পেঁচিয়ে বাইরে থেকে জানালায় গলায় ফাঁস দেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে সে ওড়না কেটে দেয়। ইলিয়াস নিচেই পড়ে যায়। এরপর তাদের এক বন্ধুকে ফোন করে খবর দেয়। এরপর লোকজন এসে ইলিয়াসের লাশ উদ্ধার করে। নিহতের বন্ধু ইয়াসিন বলেন, লিয়ার ফোনে খবর পেয়ে এসে দেখি লাশের পাশে লিয়া কাঁদছে। আমি ইলিয়াসের পালস চেক করে দেখি চলছে না। এরপর ইলিয়াস ভাইয়ের আম্মুকে খবর দিই। তারা দৌঁড়ে এসে দেখে লাশ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে দড়ি বা অন্য কিছু দেখিনি।

স্থানীয় গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, শুনেছি এই ছেলের সঙ্গে মেয়েটির তিন বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের সম্পর্কটা পরিবার থেকে মেনে নেয়নি। শনিবার দিবাগত রাতে মেয়েটি ওই ছেলেকে ফোনে ডেকেছিল। সেখানে যাওয়ার পর তার লাশ উদ্ধার হয়েছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি পরিস্কার নয়। সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন হোক। দোষী হলে তাদের শাস্তি হোক। আর নির্দোষ হলে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে অভিযুক্ত মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে ছেলেটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এপ্রিল ৩০, ২০২৩ at ১৯:৩৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এআ/ইর