অভয়নগরে বিদ্যালয়ের গেইটের সামনে সরকারি জমি দখল বিড়ম্বনায় শিক্ষার্থীরা

অভয়নগরে বিদ্যালয়ের মেইন গেইটের সামনে সরকারি জমি দখল করে রেখেছে এক ভূমিদস্যু । শুধু তাই নয় স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে মামলাও করেছেন । আর প্রতিনিয়ত হয়রানি করেও আসছেন দীর্ঘদিন ধরে তাদের । এর ভুক্তভোগী হয়েছেন স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী, অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষকমন্ডলী ।

যে কারণে স্কুলে যাতায়াতে শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিড়ম্বনায় । এ ঘটনাটি ঘটেছে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার কাপাশাহাটি গ্রামে যশোর খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুল সূত্র ও এলাকাবাসীরা জানায়, অত্র প্রতিষ্ঠানের সামনে সরকারি জমি দখল করে অবৈধভাবে গর্ত করে রেখেছে একজন ভূমিদস্যু কাপাশহাটি গ্রামের মৃত হেফাজ উদ্দিনের ছেলে মো. আব্দুল হাকিম । তিনি সরকারি জমিতে অবৈধ ভাবে গর্ত করে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে রেখেছেন । যে কারণে গত বছরের ২৯ শে আগস্ট মাসের দিকে এ ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অবৈধ উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । তাতে কোন কাজ না হওয়ায় স্কুলে যাতায়াতে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়ে আসছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ।

এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠ সমাধানের জন্য চলতি বছরের শুরুর দিকে সহকারী কমিশনার ভুমি অফিসার বরাবর আবারও হাকিম এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগে উল্লেখ্য, যশোর খুলনা মহসড়াকের পাশে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে সীমানা প্রাচীর তৈরি করেন । যাতে করে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় না পড়েন । স্কুলের মেইন গেইটের জায়গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের । যা হাকিম গর্ত করে দখল করে রেখেছে। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত যাতায়াতে দুর্ঘটনার শিক্ষার হয়। বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে যাচ্ছেন । এসময় সু কৌশলে বর্ষা মৌসুমে মো. আব্দুল হাকিম ছোট গর্তে ২হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে নাটক সাজানো বাহনা করেন । তিনি বিপদে পড়বেন জেনে ৮০ হাজার টাকার মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা এনে যশোর বিজ্ঞ আদালতে স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে মামলা দায়ের করেন । এ মামলায় আসামী করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন, সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী, জমিদাতা মৃত সাজেদুর রহমান, সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর নামে । আব্দুল হাকিম স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন সময় হয়রানি করে আসছেন । এ ব্যাপারে অভিভাবক সদস্যরা খলিল চৌধুরী, আব্দুল বাতেন, শাহিন ভুঁইয়া, আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, স্কুলে সামনের মহাসড়কের সরকারি জায়গা আব্দুল হাকিম দখল গর্ত করে রেখেছে । বাচ্চাদের যাওয়ার জায়গা নেই । ১৯৭৩ সালে এই স্কুল প্রতিষ্ঠিত । খাশ জমিটি স্কুল ভোগদখল করলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আর সমস্যা থাকবে না ।

সহকারী শিক্ষক প্রিয়া রানী দাস বলেন, মহাসড়কের জায়গায় গর্ত করে দখল করে রেখেছেন । তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা ভাবেন না । চলাচলের জন্য স্কুল গেইটে জরার্জীণ অবস্থা । আমরা সহ ছাত্র- ছাত্রীদের সমস্যা হয় । ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলের সামনে যাতায়াতের পথে আসা যাওয়ায় আমরা পড়ে আহত হই । জায়গায় দখল করে রেখেছেন তিনি যেন ছেড়ে দেন । ৪র্থ শ্রেণীতে পড়েন এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলের যাওয়া আসার রাস্তার সমস্যা । জায়গাটা দখলমুক্ত হোক ।

প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন বলেন, স্কুল গেইটের সামনে আব্দুল হাকিম নামের এক ব্যক্তি দখল করেছেন । স্কুলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভিজিট করতে ঠুকতে পারে না । গাড়ি ,ভ্যান, সাইকেল নিয়ে যাওয়া আসা করা যায় না ।বাচ্চারা দুঘর্টনায় পড়েন । আমরা কয়েকদফায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি । সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী বলেন, আব্দুল হাকিম ছোট গর্তে ২হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে নাটক সাজানো বাহনা করেন । তিনি বিপদে পড়বেন জেনে ৮০ হাজার টাকার মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা এনে যশোর বিজ্ঞ আদালতে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন । এ ব্যাপারে মো. আব্দুল হাকিম মুঠোফোনে জানান, আমার বাড়ির পাশে স্কুলের সামনে যশোর খুলনা মহাসড়কের জায়গা আমি ভোগ দখল করে খেয়ে আসছি । এটা খাঁশ জমি না। মহাসড়কের জমি । যার পাশে থাকবে সে দখল করে খাই । আমি কোর্টে মামলা করেছি । আমার মাছ মরে গেছে ।  তাদের কারণে স্কুলে কয়েকজন ছাই ফেলে দিয়ে গর্ত ভরাট করে । যে কারণে বিষাক্ত গ্যাসে মাছ মরে যায় । আমি এই বিষয়টি মিমাংশা করতে চাই। স্কুলের সামনের অংশ আমি ছেড়ে দেবো । উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কাসেম বলেন, আমি কয়েকদিন আগে যোগদান করেছি । বিষয়টি আমার জানা নেই । তবে আমি স্কুল পরিদর্শনে যাবো । উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দিন বলেন,  সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দ্বায়িত্ব দেওয়া আছে ।

এপ্রিল ১১, ২০২৩ at ১৬:৪৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/ আক/জাহোহৃ/ ইর