অভয়নগরে ২ শতাধিক মানুষের চলার এতমাত্র উপায় বাঁশের সাঁকো

যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার বেদভিটা নামক স্থানে খালের ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য একমাত্র উপায় বাঁশের সাঁকো। ভবদহের জলাবদ্ধতা এলাকায় হওয়াতে রাস্তা, কালর্ভাট, থেকে পিছিয়ে আছে গ্রামটি। যে কারণে অবহেলিত বেদভিটা গ্রামের প্রায় ৫০টি পরিবার বসবাসরত মানুষের যোগাযোগের একমাত্র উপায় বাঁশের সাঁকো। ডুমুরতলার পাশের গ্রাম বেদভিটা স্থানে খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয় আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই চলাচলের জন্য ভরসা।

জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া থেকে প্রায় ৭কিলোমিটার দক্ষিণে ভবদহের ৬ কিলোমিটার পশ্চিম দিয়ে বয়ে গেছে টেকা ও শ্রী নদী। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলটি নদীর পানি দিয়ে ঘিরে থাকে। তখন নিত্য প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয় নৌকা। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বিলের পানি কমতে থাকায় পানি-কাদা একাকার মানুয়েরা পায়ে হেঁটে উপজেলার ডুমুরতলা, চলিশিয়া, আন্ধা, বাগদাহ, পায়রা, কোটা, মশিয়াটি, সুন্দলী গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা অভয়নগর শহরে যেতে হয়। যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোন পথ না থাকায় বেদবিটা গ্রামে ৫০টি পরিবারে ২০০শতাধিক লোককে এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হয়। স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যসামগ্রী সহজ ভাবে বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন। উক্ত স্থানে ব্রিজটি নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের।

আরো পড়ুন :
>গোপালনগর নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ টিনসেটে চলছে পাঠদান
>ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল চুরি করে পালানোর সময় আটক ৩

এ ব্যাপারে জতিনদ্রনাথ, তপন কুমার ধর, মোজাহার হোসেন, শরিফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, জসিম উদ্দন, রনজিৎ মল্লিক, দিন মোহাম্মাদ, মোজাহার হোসেনসহ অনেকেই বলেন, এখানে ব্রিজ না থাকায় প্রায় সারা বছরই কষ্ট করে পারাপার হতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছেলে মেয়েদের নিয়ে আমাদের আতংকে থাকতে হয়। বেদভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম বলেন, এ গ্রামটি অত্যন্ত অবহেলিত অঞ্চল। রাস্তাঘাটের অবস্থা নাজুক। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আসতে অনেক কষ্ট পেতে হয়।বেদভিটা সাকোঁ এলাকার শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম বেগ পেতে হয়। এ বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান বলেন, ওই এলাকাটি নিম্মাঞ্চল ।

এছাড়া ও জলাবদ্ধতা থাকায় পারাপারের জন্য বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে নৌকা এবং বাঁশের সাঁকোর উপর ভরসা রাখতে হয় বসবাসরত জনসাধারণের। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ব্রিজ ও রাস্তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, প্রাকৃতিক সমস্যার কারণে ওই অঞ্চলে কোন কাজ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাজি হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ও তদন্ত সাপেক্ষে একটি ব্রিজ কিংবা কালভার্ট নির্মাণের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ব্রিজ, কালভার্ট ও রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এই গ্রামে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণের বিষয়ে আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে ভবদহ অঞ্চল হাওয়ায় বেদভিটা গ্রামের উন্নয়ন পিছিয়ে রয়েছে।

মার্চ ১৪, ২০২৩ at ১১:২৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জাহোহৃ/মমেহা