চৌগাছায় স্ত্রীকে শ্বাস রোধে হত্যা করে স্বামী পালাতক

জেলার চৌগাছায় সাহিদা খাতুন (২৭) নামে এক কোল্ডস্টোর শ্রমিককে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী সেলিম মন্ডল নামে আরেক কোল্ডস্টোর শ্রমিক। উদ্ধারের সময় লাশের গলায় প্রায় ছয়ইঞ্চি দৈর্ঘ্যরে গভীর দাগ এবং নিহতের হাত-পা ছড়ানো অবস্থায় চিৎ হয়ে শোয়ানো ছিলো। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারনা গভীর রাতে ঘুমের মধ্যে নিহতের দ্বিতীয় স্বামী সেলিম মন্ডল রশি দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করে লাশ ঢেকে রেখে পালিয়ে যায়।

রোববার (২৮আগস্ট) দুপুরে চৌগাছা পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের মাঠপাড়ার (ব্র্যাক অফিস পাড়া) একটি ভাড়ার টিনশেড বাড়ির মেঝেতে কাথা দিয়ে ঢেকে রাখা লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত সাহিদা উপজেলার চৌগাছা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কয়ারপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে। আর পালাতক স্বামী সেলিম মন্ডল কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদরগাহর বদিনাতলা গ্রামের মৃত-নজির মন্ডলের ছেলে। গত দেড় মাস (৪৫দিন) আগে তাঁরা চৌগাছা বাজারের চৌগাছা হোটেলের মালিক মামুন হোসেনের ব্র্যাক অফিসপাড়ার টিনশেডের বাড়ির একটি রুম ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে থাকতেন এবং পাশের ডিভাইন কোল্ড স্টোরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

নিহতের পিতা রবিউল ইসলাম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তাঁর মেয়ের আগে এক জায়গায় বিয়ে হয়েছিলো। সেখানে তার একটি ছেলে রয়েছে। আগের জামাই তাঁর (রবিউলের) সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সাহিদা চৌগাছা শহরের ৫নম্বর ওয়ার্ডের ডিভাইন কোল্ড স্টোরে আলু বাছাই শ্রমিকের কাজ নেন। সেখানেই ট্রাকে আলু তোলা নামানোর কাজ করা সেলিম মন্ডলের সাথে প্রেমজ সম্পর্ক তৈরি হয়।

তিনি বলেন, প্রায় দুই মাস আগে মেয়ে আমাকে বলে সেলিমের সাথে বিয়ে করবে। তখন আমি বলি কুষ্টিয়ার ছেলের সাথে মেয়ে বিয়ে দেবো না। পরে তাঁরা দুজনে এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। আজ সব শেষ হয়ে গেলো।

নিহতের পাশের রুমের ভাড়াটিয়া বকুল হোসেনের স্ত্রী সেলিনা খাতুন জানান, রোববার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে সাহিদাদের ঘরের দরজায় তালা মারা না থাকায় দরজায় ধাক্কা দিয়ে দেখেন মৃত অবস্থায় শাহিদাকে কাথা দিয়ে ঢাকা রয়েছে। এরপর তিনি স্থানীয়দের ও বাড়ির মালিক মামুনকে জানান। পরে মামুন ও স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

বাড়িটির মালিক মামুন হোসেন জানান, আমার স্ত্রীর পরিচিত হিসেবে সাহিদা বাসার রুমটি ভাড়া নেন। দেড়মাস ভাড়া নিলেও তাঁরা একমাসের ভাড়াও এখনও পরিশোধ করেন নি।

চৌগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু শেখ বলেন, লাশটি উদ্ধার করে সুরাহতল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামী পালাতক থাকায় আমরা তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযানে রয়েছি। তিনি বলেন নিহতের গলায় প্রায় ছয়ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের গভীর দাগ রয়েছে। তাঁর স্বামী গ্রেপ্তার হলে বোঝা যাবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে যা আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।

চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। সেলিম মন্ডলকে আটকে অভিযান শুরু হয়েছে।