যশোরে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ: ভাই বোনসহ আসামী তিনজন

যশোরে এক নারীকে (১৮) ধর্ষণ ও সহায়তার অভিযোগে দুই ভাই বোনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা হলো, সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর মোল্লাপাড়ার ইউসুফ আলী মোল্লার ছেলে মাসুদ (৩০) ও তার বোন সিমা খাতুন (২৫)। পুলিশ আসামি সিমা খাতুনকে আটক করেছে।এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, আসামি মাসুদ প্রায় সময় তাকে উত্যক্ত করতো। প্রেম নিবেদন করতো। তিনি তার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বিষয়টি তার পিতামাতাকে জানান। তার পরিবারের লোকজন মাসুদকে নিষেধ করে। কিন্তু কোন কর্ণপাত করেন না। ফলে বাধ্য হয়ে তার পরিবারের লোকজন গত বছর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি এলাকায় বিয়ে দেন। সেখানে ঘর সংসার করার সময় আসামিদ্বয় প্রায় সময় তাকে নানা প্রলোভন দেখাতো। এক পর্যায়ে আসামি মাসুদ তাকে তার শ্বশুর বাড়িতে থেকে নিয়ে আসে এবং গত ১৮ ডিসেম্বর কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে তালাক করিয়ে দেয়। এরপর তিনি তার পিতার বাড়িতে থাকতেন। সে সময় মাসুদ তাকে বিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক মেলামেশা করে। বিয়ের কথা বললে সে আজ না কাল কলে ঘুরাতে থাকে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে আসামি সিমা বিয়ের কথা বলে মাসুদের ঘরে নিয়ে যায় তাকে। এরপর তার সাথে মেলামেশা করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তিনি বিয়ে না করলে মেলামেশা হবে না জানালে মাসুদ জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরদিন সকালে বিয়ে করবে না বলে জানায়। তিনি তার মাকে বিষয়টি জানান। পরে পরিবারের লোকজন আসামিদ্বয়ের সাথে একাধিকবার আপোষ মিমাংশার প্রস্তাব দিলে তারা তা মানতে রাজি হয় না। ফলে এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে তিনি কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।

আরো পড়ুন :
রাজশাহীতে পলিত হলো পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২২
যশোরের শার্শায় ভুয়া মহিলা ম্যাজিষ্ট্রেট আটক

এলাকাবাসি জানিয়েছে, আসামি মাসুদের স্বভাব চরিত্র ভাল না। ওই মেয়ের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তাকে বিয়ে দেয়ার পরও মাসুদ পিছে লেগে থাকে। মেয়েটির বয়স ১৫ বছর। মেয়েটিকে দিয়ে মাসুদ তার স্বামীকে তালাক করিয়ে নেয়। এরপরও তাকে বিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এছাড়াও মাসুদ ওই এলাকার আরো কয়েকটি মেয়ের সাথে প্রতারনা করেছে। তাকে নিয়ে ইতোমধ্যে এলাকায় শালিসও হয়েছে।

ওই মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, মাসুদের পরিবারের সাথে কথা বলে কোন সুরাহ না হওয়ায় থানায় অভিযোগ করা হয় ১০ ফেব্রুয়ারি। অভিযোগটি নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের পাঠানো হয়। কিন্তু ক্যাম্পের পুলিশ সেদিন আসামি আটক বা কোন তদন্ত না করে গত সোমবার বাড়িতে গিয়ে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়েছে। একেতো আসামির পরিবারের লোকজন কালক্ষেপন করেছে ৫দিন; তারওপর পুলিশ আরো ২০দিন সময় নিয়েছে। ফলে ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত নাও পাওয়া যেতে পারে। সঠিক তদন্ত না হলে মেয়েটি বিচার পাওয়া নিয়ে স্বংশয়ে থাকবে। এবিষয়ে নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সুপ্রভাত মন্ডল জানিয়েছেন, ‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ব্যবস্থা নিয়েছি। ওই মেয়ের পরিবারের লোকজন একটি সমঝোতায় যেতে চেয়েছিল। কিন্তু হয়নি। এছাড়া এই মামলার আসামি সিমাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজাতে পাঠানো হয়েছে।

মার্চ ১, ২০২২ at ২১:৪০(GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দপয/এমএইচ