হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন চক্রবর্তী

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য (প্রেসিডিয়াম মেম্বার) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সংগঠনের পাবনা জেলা শাখার সভাপতি এবং পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন কুমার চক্রবর্তী।

গত ৭ ও ৮ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ঐক্য পরিষদের দশক ত্রিবার্ষিক জাতীয় সন্মেলনে কাউন্সিল অধিবেশনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহার সভাপতিত্বে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট বিষয় নির্ধারণী কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটি বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে উপদেষ্টা করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টামন্ডলী এবং কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করে। যেখানে উষাতন তালুকদার, অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিওকে সভাপতি এবং রানা দাশগুপ্তকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। উক্ত কমিটিতে দেশের স্বনামধণ্য ও স্বচ্ছ ব্যক্তিদের মাঝে ৩২ জনকে সভাপতিমন্ডলীতে রাখা হয়েছে যেখানে অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য মনোনিত হয়েছেন পাবনার কৃতী সন্তান চন্দন চক্রবর্তী।

উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন চক্রবর্তী রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) এবং বগুড়া সদর সার্কেলের সাবেক সফল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর গর্বিত বাবা।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালের ২৮শে মার্চ পাবনায় রফিকুল ইসলাম বকুলের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন চন্দন চক্রবর্তী। পরবর্তীতে ভারতের শিলিগুড়ি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৭নং সেক্টর কমান্ডার কাজী নুরুজ্জামান, মেজর ইদ্রিস, মেজর গিয়াসের নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সম্মুখ সারিতে থেকে যুদ্ধ করেছিলেন তিনি। তৃণমূলের এই সাদামাটা মানুষটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং ২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সফলভাবে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শুধু তাই নয় ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সফলভাবে পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রাজপথের পরীক্ষিত নেতা চন্দন চক্রবর্তী। এর মাঝে সম্মুখসারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজপথের সকল লড়াই সংগ্রামে। ১৯৮১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলর হিসেবে রয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী রাজনীতিতে তার এই যাত্রা মোটেও সহজ ছিলোনা । হাজারো প্রতিবন্ধকতা কে জয় করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি নিঃস্বার্থ ভালবাসা ও দেশপ্রেমে নিমজ্জিত হয়ে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য চন্দন চক্রবর্তী ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানেও পাবনার আতাইকুলা ইউনিয়নকে সংগঠিত করেছিলেন। তার সম্পর্কে পাবনার সম্মুখসারির আওয়ামী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন চক্রবর্তী ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট পরবর্তীতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে অন্যায়ভাবে কারাবরণও করেছেন। সহ্য করেছেন শাসকদের অমানুষিক নির্যাতন। পরবর্তীতে এরশাদের আমলেও তাকে কারাবরণ করতে হয়েছিল। ১৯৮১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সফর করেছেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। এছাড়াও ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং ফখরুদ্দীন সরকারের সময় পাবনার আওয়ামী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন চন্দন চক্রবর্তী।

আরো পড়ুন:
আনসার-ভিডিপি রাষ্ট্রপতি পদক পেলেন মণিরামপুরের সুমন
যশোর সিমান্ত পরিবহন বাস মালিক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গবন্ধু ও তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালবাসা ও আত্মত্যাগে আজও পাবনার সকলের ভালবাসার জায়গা ধরে রেখেছেন তৃণমূলের এই ত্যাগী নেতা।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে প্রেসিডিয়াম মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া প্রসঙ্গে মুঠোফোনে বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন চক্রবর্তীর সাথে কথা বললে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও পাবনাসহ দেশবাসীর কাছে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব যেন তিনি সঠিকভাবে পালন করতে পারেন সেই লক্ষ্যে আশীর্বাদ ও সর্বদা সহযোগিতা কামনা করেছেন। এছাড়াও আমৃত্যু তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিতে জাতির পিতার আদর্শে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

ফেব্রুয়ারি ১১.২০২২ at ২১:১১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রইর/জআ