এতিম শিশুদের নৃশংসভাবে পিটানোর ভিডিও ভাইরাল মাদরাসা শিক্ষককে অব্যাহতি

সুনামগঞ্জের ছাতকে খুবেই নৃশংসভাবে এতিম ৮ থেকে ৯ বছরের এক শিশুকে পিটাচ্ছেন মাদরাসা শিক্ষক। একপর্যায়ে সহ্য না করতে পেরে শিশুটি পা ধরে ফেলে শিক্ষকের। তারপরও রেহাই পায়নি। প্রতিষ্ঠানের প্রধান মাওলানা মো. আবদুল মুকিত তাকে বেধড়ক পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে। একপর্যায়ে এতিমখানার যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিচালকদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা তাকে অব্যাহতিপত্র ধরিয়ে দেন। ওই অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আবদুল মুকিত মৌখিকভাবে নির্যাতনের স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে অব্যাহতিপত্রে । এর আগেও তিনি এভাবে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন।

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার হাজি ইউসুফ আলী এতিমখানা হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার মোহতামিম (অধ্যক্ষ) মো. আবদুল মুকিত একই উপজেলার রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা। কয়েক বছর আগে ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পান তিনি।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে ওই ভিডিওটি কয়েক মাস পূর্বের। এ নির্মম ঘটনার ভিডিওটি মাদরাসারই অন্য কোনো শিক্ষক গোপনে ধারণ করেন। কয়েক দিন পরে এটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

দুই মিনিট ২ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পাজামা পাঞ্জাবি পড়ুয়া তিনজন এতিম শিশু দাঁড়িয়ে আছে। তাদের সামনে স্টিলের স্কেল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আবদুল মুকিত। ৮ থেকে ৯ বছরের এতিম শিশু একই উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আবু তাহের, শফিউর রহমান ও নিলয় মিয়া দাঁড়িয়ে আছে। শফিউর ও নিলয়কে এর আগে বেদম প্রহার শেষে ৮ থেকে ৯ বছরের আবু তাহেরকে দুই হাত বের করে স্টিলের স্কেল দিয়ে সমানে পিটাতে থাকেন মাওলানা মো. আবদুল মুকিত। অনেক সময় ধরে পেটানোর পর ওই শিশুটি পা ধরে বসে থাকে।

আরো পড়ুন:
সিরাজগঞ্জে শ্বশুরকে হত্যার দায়ে জামাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক আবেদন ফি বাতিলের দাবি

এ ঘটনায় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। ওই শিক্ষকও ইতোমধ্যে অন্য একটি মাদরাসায় চাকরি নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। তবে এলাকার অনেকে জানিয়েছেন, তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে পরিচালনা পরিষদ।

হাজি ইউসুফ আলী এতিমখানা হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোলাম রসুল বলেন, ৬ নভেম্বর মাওলানা মো. আবদুল মুকিতকে অব্যাহতি দিয়ে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিন শিশুকে নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে আসার পরই এই সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ওই শিক্ষকের কৃতকর্ম সম্পর্কে সব কিছুরই সংক্ষেপ তার অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ আছে।

ছাতক থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।

নভেম্বর ১৬.২০২১ at ১৬:০৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জআভ/জআ