সড়ক দূর্ঘটনায় কাঁচামাল ব্যবসায়ীর মৃত্যু; স্বজনদের অভিযোগ হত্যা

নেত্রকোনার মদনের সুমন মিয়া (৩৫) নামে এক কাঁচামাল ব্যবসায়ী সড়ক দূর্ঘটনায় চট্টগ্রামে নিহত হয়েছেন। সড়ক দূর্ঘটনা নয় পরকীয়া প্রেমের জেড়ে হত্যা করা হয়েছে সুমনকে এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা। এমন অভিযোগ উঠলে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সোমবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা মর্গে প্রেরণ করেছেন মদন থানার পুলিশ। নিহত সুমন মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের বাশরী দক্ষিণপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। শনিবার (১৩ নভেম্বর) চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকার আনন্দ বাজার নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সুমন মিয়া কয়েক বছর আগে একই ইউনিয়েনের মাহরা গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার বড় মেয়েকে বিয়ে করেন। প্রায় ১০ মাস আগে ১ দিন বয়সী শিশু সন্তান রেখে তার স্ত্রী মারা যান। ১ দিন বয়সী শিশু সন্তানের দিক বিবেচনা করে তারই শ্যালিকা পোশাক শ্রমিক পপিকে বিয়ে করেন সুমন। প্রায় তিন মাস আগে শিশু সন্তানকে সুমনের মায়ের কাছে রেখে দুজনেই (পপি ও সুমন) চট্টগ্রামে চলে যান। সেখানে গিয়ে স্ত্রী পপি পোশাক কারখানায় ও সুমন ভ্যানে করে কাঁচামালের ব্যবসা শুরু করেন।

প্রতিদিনের মতো শনিবার (১৩ নভেম্বর) স্ত্রী পোশাক কারখানায় চলে গেলে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বের হয় সুমন। রাতে বাসায় না আসলে আত্মীয় স্বজনরা খোঁজাখোজি করতে থাকে। রাতেই বন্দর থানার পুলিশ জানান, আনন্দ বাজার এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত সুমনের মরদেহ চকবাজার হাসপাতালে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে নিহতের ভাই সুজন ও প্রতিবেশী আত্মীয় কামাল মরদেহটি রবিবার রাতে মদন উপজেলায় তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। পরকীয়া প্রেমের জেড়ে সুমনকে হত্যা করা হয়েছে স্ত্রী পপির বিরুদ্ধে এমনটা অভিযোগ তুলেন সুমনের পরিবার। এ নিয়ে এলাকায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হলে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহটি সন্ধ্যায় নেত্রকোনা মর্গে পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন:
ভোলায় ৮ শ পিচ ইয়াবাসহ ৩ মাদক বিক্রেতা আটক
গাজীপুরের টঙ্গীতে যুবলীগকে সুসংগঠিত করে তৃণমূলে যারা জনপ্রিয়

নিহত সুমনের মা আবেদা আক্তার ও বোন শেফালী আক্তার বলেন, সুমনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার স্ত্রীর পরকিয়া সর্ম্পক রয়েছে। সুমনের শশুর বাড়ির লোকজন সুমনকে পরিকল্পিকত ভাবে হত্যা করেছে বলে তদন্তর দাবি জানান তারা।

এ ব্যাপারে সুমনের শ্যালক মিনারুল হক জানান, আমরা চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকের কাজ করি। সড়ক দূর্ঘটনার সুমন মারা গেছে খবর পেয়ে তাদের আত্মীয় স্বজদের সাথে লাশ নিয়ে আমরাও সুমনের বাড়িতে এসেছি। আমার বোন পপি সারাক্ষণ তাদের সাথে ছিল। রবিবার রাতে লাশ নিয়ে বাড়িতে আসার সাথে সাথেই আমাকে মারপিট, নির্যাতন শুরু করে। পরে এলাকার লোকজন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তারা আমাদের উপর মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।

চট্টগ্রামের বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নেত্রকোনার মদন উপজেলার বাঁশরী গ্রামের সুমন মারা যায়। পরে তার ভাই সুজনের সাথে মুঠোফোনে কথা বলে স্বজনের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, নিহত সুমনের পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে মরদেহটি ময়নাতদন্তরে জন্য সোমবার নেত্রকোনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল যেহুতু চট্টগ্রামের বন্দর থানা, এ বিষয়ে সেখানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নভেম্বর ১৬.২০২১ at ১৫:৪৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আআ/জআ