দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের উপর এলপিজি, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধি ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’

যশোর জেলা

দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের ওপর ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধিকে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ আখ্যায়িত করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ। আজ ০৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের জেলা সভাপতি আব্দুল হক ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান এই দাবি জানিয়ে বলেন, নিত্যপণ্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতিতে এমনিতেই জনজীবন দিশেহারা।

তার উপর সরকার নতুন করে এক লাফে লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর কারণে ডিজেল ও কেরোসিন প্রতি লিটার ৮০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। এলপিজির মূল্যও ১২ লিটার ৫৪টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পণ্য ও যাত্রী পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনেও খরচ বৃদ্ধি পাবে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে জনগণের প্রাত্যহিক জীবনে। কেরোসিনও সাধারণ আয়ের জনসাধারণ ব্যবহার করে থাকেন।

এলপিজির মূল্য বৃদ্ধিও জনজীবনে সঙ্কট বৃদ্ধি করবে। করোনায় সরকারের দায়হীন লকডাউন চাপিয়ে দেওয়ার কারণে গত এক বছরে নতুন করে আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন এবং ৬২ শতাংশ শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। অথচ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি এবং করোনার কারণে শ্রমিক, শ্রমজীবী ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন ও জীবিকার অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে সরকার তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

উপরন্ত সরকার দায়হীনভাবে পানি, এলপি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধি করেছে, আগামীতে নতুন করে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ১৩ বছরে ১৪ দফায় পানি, ৭ দফায় গ্যাস, ১০ দফায় খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৯০ শতাংশ, একাধিকবার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে শ্রমিক, শ্রমজীবী, স্বল্প আয়ের মানুষ ও ব্যাপক জনগণের জীবন ও জীবিকাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে জনগণ দিশেহারা। অথচ সরকার একদিকে উন্নয়নের বাজনা বাজাচ্ছে আবার একই সাথে জীবন-জীবিকার সকল প্রয়োজনীয় বিষয়কে রাষ্ট্রীয়, দলীয় ও ব্যবসায়ীদের অবাধ লুটপাট ও লাগামহীন বাণিজ্য ক্ষেত্রে পরিণত করে চলেছে।

আরো পড়ুন :
স্ত্রীর উপর অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা
বাবার সঙ্গে প্রেম, বাবা ও তার প্রেমিকাকে বেধড়ক পেটাল দুই মেয়ে

কায়েমী স্বার্থবাদীদের স্বার্থরক্ষাকারী রাষ্ট্র ও সরকারের কাছে মানবিকতা, জনজাীবনের প্রয়োজন শুধু মুখেরই কথা, মূল লক্ষ্য হচ্ছে লুটপাট ও মুনাফা। দুর্যোগ মহামারিতেও এর ব্যতিক্রম ঘটে না। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে করোনা মহামারিতে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ার সাথে সাথে লুটপাটকারীদের অর্থবিত্ত বৈভব বেড়ে যাওয়ায় দেশে ২০২০ সালেই ১০ হাজার ৫১ জন নতুন কোটিপতির সৃষ্টি হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, শ্রেণি বিভক্ত সমাজে বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রে যে শ্রেণির সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা সেই শ্রেণিরই স্বার্থ রক্ষা করে। বাংলাদেশ একটি নয়াউপনিবেশিক আধাসামন্ততান্ত্রিক দেশ। এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় এ যাবত অধিষ্ঠিত সকল সরকারই হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল সামন্ত আমলা মুৎসুদ্দি শ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী সরকার। তাই শোষকশ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী সরকার কখনোই জনগণের কথা ভাববে না এটাই স্বাভাবিক।

এমতাবস্থায় নেতৃবৃন্দ এ ধরনের জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি জনগণের স্বার্থরক্ষাকারী রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা, দালালপুঁজি বিরোধী শ্রমিক-কৃষক জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান জানান।

নভেম্বর ০৪.২০২১ at ২১:৫৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আক/রারি