দুমকিতে ‘পায়রা সেতু’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। ৭৫’ পরবর্তি সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। বরিশাল বিভাগের মেঘা উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ণণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজকে সারা বিশ্বে উন্নত একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের যুক্ত করা হবে। রবিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর অত্যাধুনিক ‘পায়রা সেতু’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।

পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় পটুয়াখালী প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি, পটুয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান মিয়া, পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসম ফিরোজ, পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা, পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মহিববুর রহমান, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ, বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রত্না, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, মহিলা আসন ২৯’র সংসদ সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন, মহিলা আসন ২৮ এ্যাডভোকেট সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খলিলুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুচ, শেখ হাসিনা সেনা নিবাস কমান্ডার জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল আবুল কালাম মো. জিয়াউর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস. এম. আক্তারুজ্জামান, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর, প্রবিপ্রবি ভিসি ড. সদেশ চন্দ্র সামন্তসহ বরিশাল, পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসনের সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুব্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দেশকে এগিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।

এদিকে পায়রা সেতুর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে ফেরীবিহীন সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে। পায়রা সেতু উন্মুক্ত হওয়ায় বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সঙ্গে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দর পর্যন্ত সড়ক পথ ফেরিবিহীন হলো।

এর আগে বরিশাল থেকে মহাসড়ক পথে কুয়াকাটা পৌঁছাতে ছয়টি স্থানে ফেরি পার হতে হতো। চার লেনের এই পায়রা সেতুর দৈঘর্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার, প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। জলতল থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর শাহ আমানত সেতুর আদলে নান্দনিক নকশায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।

আরো পড়ুন :
যুবলীগ চেয়ারম্যান পরশের নামে অর্থ আদায়ে দুজন কারাগারে
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক, মহাসচিব দ্বীপ

সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, সেতুর উভয় পারে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি খুঁটি বা পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। এ কারণে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে না।

এ ছাড়া এই সেতুতে ‘ব্রিজ হেলথ মনিটর (সেতুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণব্যবস্থা) স্থাপন করা হয়েছে। এতে বজ্রপাত, ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যানবাহন চলাচলে সেতুর কোনো ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হলে আগেভাগেই সংকেত পাওয়া যাবে।

আধুনিক টোল প্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে। রাখা হয়েছে উভয় পাশের্ব যানবাহনের ওজন পরিমাপের ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সরকার ২০১২ সালের মে মাসে পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

পায়রা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করেছে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। নির্মাণকাজ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন।

অক্টোবর ২৪.২০২১ at ১৭:৩০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোজউ/রারি