২২ বছর বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষকতা

১৯৯৯ সাল থেকে বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষাদান করে যাচ্ছেন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের কে. এইচ. এ. নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষক। বিদ্যালয়টিতে নিম্ন মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণি) পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

এ বিদ্যালয়টিতে সর্বমোট শিক্ষার্থী (ছাত্রী) রয়েছে ১২৭ জন। তন্মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৫০ জন, সপ্তম শ্রেণিতে ৫০ জন এবং অষ্টম শ্রেণিতে ২৭ জন ছাত্রী অধ্যায়ন করছে। তবে, নিয়মিত উপস্থিত থাকে প্রতি শ্রেণিতে ৫-৮ জন।

এর কারণ জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির শিক্ষিকা রাজিয়া সুলতানা বলেন, এখানে সরকারি সুবিধা নেই বললেই চলে। সরকারি বৃত্তি ব্যবস্থাও নেই।এজন্য অনিয়মিত আর ঝরে পড়ার হার বেশি এই স্কুলে।

এখানকার শিক্ষার্থী অজুবা ও মতিয়া জানায়, বাড়ির কাজ শেষ করে বিদ্যালয়ে আসা সম্ভব হয় না আমাদের। আর পড়ালেখার খরচ যোগানোর সামর্থ নেই আমাদের।

আরো পড়ুন :
সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে যানজট, ভোগান্তিতে চালক-যাত্রী
র‌্যাব ‘ওআইভিএস’ দিয়ে যেভাবে অপরাধী শনাক্ত করে

আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর-একদন্ত সড়কের কেদারপাড়ায় অবস্থিত এ বিদ্যালয়টিতে ২২ বছর ধরে স্থানীয় মেয়েদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে যাচ্ছেন ৪ শিক্ষক (মো. আশরাফ আলী, মোছা. রাজিয়া সুলতানা, মো. বাছের উদ্দিন এবং মো. আবুল কালাম আজাদ)।

এই চার শিক্ষকের নেই কোনো বেতন বা সরকারি সুযোগ সুবিধা। এমনকি শিক্ষার্থীদের নিকট থেকেও কোনো প্রকার অর্থ আদায় করা হয় না।

বিদ্যালয়টির দুই শিক্ষক মো. বাছের উদ্দিন ও মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সম্মানী না পেলেও আমরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিচালনা করছি। সরকারি ছুটি ব্যতিত সকল কর্মদিবসেই আমরা উপস্থিত থাকি এবং শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করার চেষ্টা করি।

এখানকার প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফ আলী জানান, বিদ্যালয়টি সরকারি স্বীকৃতি প্রাপ্ত। তবে বিদ্যালয়টি এম. পি. ভূক্ত নয়। মন্ত্রণালয়ে কাজ চলছে দীর্ঘদিন যাবৎ। কিন্তু সুসংবাদ এখনো আসেনি।

বিদ্যালয়টির সভাপতি একদন্ত ইউনিয়নের সাবেক ইউ. পি. চেয়ারম্যান ওমর আলী বিশ্বাস বলেন, বিদ্যালয়টি নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন রয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবর থেকে শিক্ষকদের এমপিওভূক্তির রেজিষ্ট্রেশন শুরু হবে। আমাদের স্যারেরাও আবেদন করবেন।

তবে এসবের মধ্যেও দুইটি শ্রেণি কক্ষ (ইটের দেওয়াল- টিনের চাল দিয়ে) তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। সভাপতি ও শিক্ষকদের দুরদর্শিতায় আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবে এই বালিকা বিদ্যালয়টি, সে প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

অক্টোবর ০৬.২০২১ at ১৫:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মিতা/রারি