মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও জুয়াড়ীদের অভয়ারণ্য বগুড়ার গাবতলী

মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়ীদের অভয়ারণ্য ও নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্রের পরিণত হয়েছে বগুড়ার জেলার গাবতলী উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন। গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ প্রায় সব ধরনের মাদকদ্রব্য মিলছে হাতের নাগালেই এবং সাথে চলছে জুয়ার জমজমাট আসর। উপজেলার মহিষাবান, নশিপুর, বালিয়াদিঘী, দূর্গাহাটা ইউনিয়ন সহ বেশ কিছু গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে মাদক ব্যবসা ও জুয়া খেলার আসর চলার অভিযোগ রয়েছে এইসব এলাকার সচেতন মহলের। আর এসব চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও জুয়াড়িরা প্রকাশ্য অবাধ বিচরণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। আর পুলিশ প্রশাসনও এ ব্যাপারে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে এইসব এলাকার সুশীল সমাজ দাবি করেছেন।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, উপজেলার মহিষাবান, নশিপুর, বালিয়াদিঘী, দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন বন্দর, বাজার ও বিভিন্ন গ্রামে অবাধে মাদক ব্যবসা ও জুয়া খেলার আসর চলে আসছে। এইসব এলাকায় মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থান হওয়ায় এখানে নির্বিঘ্নে তারা প্রতিদিন বিকেল থেকে মধ্যরাত অবধি গ্রামের বিভিন্ন সড়কে ফেনসিডিল, ইয়াবা, টাফেনটা, গাঁজা ও হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন ও লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়া চলেছে। তবে রাত যতই বাড়তে থাকে জুয়া ও মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী সচেতন এসব ইউনিয়ন বাসীরা বলেন, এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গোপনে বিভিন্ন দপ্তরে ও সরকারি জরুরি সেবা (৯৯৯) বলা হলেও অজ্ঞাত কারণে মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহিষাবান ইউনিয়নের বেশ কয়েক জন প্রবীণ লোক জানায়, বিকেল শুরু হতেই বেশ কিছু জুয়াড়ি একত্রিত হয়ে মোটরসাইকেল ও নৌকা যোগে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের শেষ সীমানা ও দূর্গাহাটা ইউনিয়নের শুরু নয়াপাড়া নামক একটি গ্রামে মাঝ নদীতে ডিজেল চালিত বড় নৌকা নোঙ্গর করে ১৫ থেকে ৪০ জনের (দিনভেদে লোক কম বেশি হয়) একটি জুয়াড়ি দল প্রতিদিন জুয়া খেলা পরিচালনা করে থাকে আর এই জুয়ার আড়ালে মাদকের বিচারন থাকে সেইখানে গাবতলী উপজেলা ছাড়াও সারিয়াকান্দি, ধনুট উপজেলা থেকে লোকজন জুয়া খেলতে আসে আর জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ওখানে গড়ে উঠেছে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের আবাদ বিচরণ। তিনি আরো জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ওই এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতেও ইয়াবা তুলে দিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এই সব লোকজন প্রভাবশালী হওয়ার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায় না।

আরো পড়ুন:
ধর্ষন মামলার আসামী বিএনপি নেতা
কুষ্টিয়ায় জেলের জালে ধরা পড়লো বিষাক্ত ‘চন্দ্রবোড়া’

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক মাদকসেবী জানান, আমরা এইসব মাদক উক্ত এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করি ‘মুঠোফোনে আগেই বাবা (ইয়াবা) অর্ডার দিয়ে রাখি, তারপর জুয়া খেলা শুরু হওয়ার আগে গিয়ে নিয়ে আসি। আর পানি (মদ) আনি বগুড়া শহরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন (মদের বার) থেকে।

এ ব্যাপারে গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম সাথে কথা বললে তিনি জানান, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি এবং জানাও ছিল না। এখন জানলাম, অভিযান চালানো হবে এবং মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সেপ্টেম্বর ১৯.২০২১ at ১৪:০৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রইর/জআ